২২ মার্চ ২০২৫, শনিবার

একজন মেধাবী গুনী আমলাকে কমিশনার পেল দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img
spot_img

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন কমিশনার নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক সচিব আছিয়া খাতুন। মঙ্গলবার তাকে এ নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪’ এর ৬(১) ধারার বিধান মতে তিনি এই নিয়োগ পেয়েছেন। একই সঙ্গে আইনের ১৩ ধারার বিধান অনুযায়ী কমিশনার হিসেবে আছিয়া খাতুনের বেতন-ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্টের একজন বিচারপতির সমান নির্ধারণ করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

আছিয়া খাতুন সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সচিব থাকার সময় ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি অবসরে যান।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী, কমিশন তিনজন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত হয়। তাদের মধ্য থেকে একজন হন চেয়ারম্যান। কমিশনারদের মেয়াদ পাঁচ বছর।

২০২১ সালের ৩ মার্চ দুদকের বর্তমান চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ নিয়োগ পান। একই দিন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. জহরুল হককে দুদকের কমিশনার করা হয়।

কিন্তু মোজাম্মেল হক খান ২০১৮ সালের ২ জুলাই কমিশনার হিসেবে দুদকে যোগ দিয়েছিলেন। তার পাঁচ বছর মেয়াদ ১ জুলাই শেষ হবে। মোজাম্মেল হকের স্থালাভিষিক্ত হচ্ছেন আছিয়া খাতুন।

নবনিযুক্ত কমিশনারের সংক্ষিপ্ত পরিচয়—

#জন্ম, জন্মস্থান ও ব্যক্তিগত জীবন:
আছিয়া খাতুন ১৯৬৩ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা শহরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিতা ও এক কন্যা সন্তানের জননী। তার স্বামীও একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ সরকারের সচিব।

#শিক্ষাজীবন:
তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম.কম (হিসাব বিজ্ঞান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং কৃতিত্বের স্বাক্ষর হিসেবে “মন্নুজান হল কৃতি ছাত্রী” পুরস্কার লাভ করেন। তিনি পরবর্তীতে দ্য ইন্সটিটিউট অব সোস্যাল স্টাডিজ, দ্য নেদারল্যান্ডস হতে উইমেন এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর হতে ‘পাবলিক পলিসি’-তে মাস্টার্স ডিগ্রী এবং নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর হতে এম.বি.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-র স্লোন বিজনেজ স্কুল হতে এ্যাডভান্সড ম্যানেজমেন্ট কোর্স সম্পন্ন করেন।

#কর্মজীবন:
তিনি ১৯৯১ সালের ২৬ জানুয়ারী বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের সদস্য হিসেবে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, চট্টগ্রামে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নোয়াখালী ও খুলনাতে সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়-এ সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে ও উপসচিব থাকাকালীন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমীর পরিচালক পদে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশের বাইরে সৌদি আরবের জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে কাউন্সেলর পদেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমীর মেম্বার ডিরেকটিং স্টাফ (এমডিএস) পদে কর্মরত ছিলেন।
২০২০ সালের ০৭ জুন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়-এর সচিব পদে যোগদান করেন।
সরকারি কাজে স্যারের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি গত ২৯ বছর সরকারের সচিবালয় এবং মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপসচিব এবং সিনিয়র সহকারী সচিব ও সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়াও তিনি পাবলিক পলিসি, লিডারশিপ, নেগোশিয়েশন এন্ড কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট এবং উইমেন এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ের একজন প্রশিক্ষক এবং বাংলাদেশে স্বীকৃত প্রশিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ট্রেনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট-এর একজন জীবন-সদস্য।

ভ্রমণের অভিজ্ঞতা :
তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, দ্য নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, জার্মানী, বেলজিয়াম, ইটালী, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, গ্রীস, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ভিয়েতনাম ও শ্রীলংকা উল্লেখযোগ্য।

(এইদিনএইসময়/১৩জুন/এলএ)

সর্বশেষ নিউজ