পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে বিভিন্ন ধরনের মসলার চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। বিক্রেতারাও ইতিমধ্যে দোকানে বিভিন্ন পদের মশলা তুলেছেন।
অর্থবছরের শুরুতে অন্যান্য পণ্যের মতো দেশে মসলার বাজারও স্থবির হয়েছিল। ডলার সংকটের কারণে মসলা আমদানি কমে যায়। তবে ব্যাংকগুলোতে ডলারের জোগান বাড়ায় মসলা আমদানির এলসি খোলার সুযোগ পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মসলার আমদানি যেমন বেড়েছে, তেমনি জোগান বাড়ায় সরগরম মসলার বাজার।
ঈদকে সামনে রেখে গত ২০ দিনেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রেকর্ড ৩ হাজার টন দারুচিনি, ৭৬৫ টন এলাচ, ৪৩৭ টন লবঙ্গ এবং ৬৬১ টন জিরা আমদানি হয়েছে। এ নিয়ে গত ৬ মাসে ৬১ হাজার টন মসলা আমদানি করা হয়েছে। কিন্তু নানা অজুহাতে দাম কমছে না মশলার ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মসলার আমদানি অনেকাংশে বেড়েছে। বিশেষ করে মে মাসের শেষের দিকে এবং জুন মাসের প্রথম দিকে মসলা আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ২০ দিনে ৭৬৫ টন এলাচ, ৩ হাজার ৬০ টন দারুচিনি, ৬৬১ টন জিরা, ৪৩৭ টন লবঙ্গ, ৫২০ টন গোলমরিচ এবং ৬৯ টন জয়ত্রী আমদানি হয়েছে।
আমদানি বাড়ার বিষয়ে দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের মালিক নূরুল আজিম মুন্না বলেন, অন্যান্য বছর দেখা যেত কোরবানির ঈদের আগে একটি কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়ে যেত। এবার সেটি হয়নি। এবার সুখবর হচ্ছে, প্রচুর পরিমাণে মসলা আসছে এবং তা ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। কোনো প্রকার সংকট নেই।
তবে ঈদ সামনে রেখে রেকর্ড পরিমাণ মসলা আমদানি হলেও তার বিপরীতে মসলার দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বিশেষ করে এলাচ, দারুচিনি ও গোলমরিচের দাম সামান্য পরিমাণে কমলেও জিরা এবং লবঙ্গের দাম বাড়ছে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে ভারত থেকে জিরাসহ অন্যান্য মসলা ঢোকার সুযোগ পেলে তাহলে হয়তো বা মসলার দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে এলাচের কেজি ছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা, যা বর্তমানে ১ হাজার ৩৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০ টাকায় নেমে এসেছে। পাশাপাশি দারুচিনির দাম ২ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৩১৫ টাকা কেজিতে। এছাড়া গোলমরিচের কেজি ৬২০ টাকা ও জয়ত্রী ৩ হাজার টাকা।
অন্যদিকে দাম বেড়েছে জিরা ও লবঙ্গের। গত সপ্তাহে মসলা দুইটির কেজি ছিল যথাক্রমে ৭৮০ টাকা ও ১ হাজার ৪০০ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৯৫ টাকা ও ১ হাজার ৪২০ টাকা।
জিরার দাম বাড়ার বিষয়ে বাংলাদেশ মসলা ব্যবসায়ী সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট অমর কান্তি দাস বলেন, ভারতে জিরার দাম চড়া। সেখানেই যদি জিরার দাম ৪৫০ টাকা হয়। তাহলে বাংলাদেশের বাজারে তার দাম ঠেকে ৭০০ টাকায়। এর জন্যই মূলত দাম বেশি। তা ছাড়া কোনো কারণ নেই।
দামি মসলা ছাড়াও গত ৬ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৩৬ হাজার ৫২৬ টন রসুন, ৮ হাজার ৯৩০ টন আদা ও ১ হাজার ২১৩ টন মৌরি আমদানি হয়েছে।
(এইদিনএইসময়/১৪জুন/তাবী)