সারাদেশে নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা, মঙ্গলবার সকালে পটুয়াখালী অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ধীরে ধীরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে। এর প্রভাবে সাগর ও নদী উত্তাল। ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বইছে। উপকূলীয় জেলাগুলোতে ক্রমেই বাড়ছে বৃষ্টি ও বাতাসের তীব্রতা।
এ অবস্থায় সারা দেশে সব ধরনের নৌ-যান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
একইসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে আজ সোমবার সকালে বিআইডব্লিউটিএর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন।
আজ দুপুর ১২ টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিত্রাং পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি ১৫ কিলোমিটার বেগে উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছে বরিশাল ও চট্টগ্রামের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করবে।
ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে তারা সতর্কবার্তা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে মোংলা ও পায়রাকে সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মাঝারি থেকে তীব্র ঝড়ের কবলে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে সাধারণত ৭ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়। সেসময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে।
উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনীও ৭ নম্বর সংকেতের আওতাধীন।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৬ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আমাদের ভোলা প্রতিনিধি জানান, জেলার অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
রবিবার রাত ৯টায় শুধু অভ্যন্তরীণ রুটে এবং সোমবার সকাল থেকে দূরপাল্লার রুটেও নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিআইডব্লিটিএ।
এর মধ্যে ভোলা-ঢাকা, ভোলা-লক্ষীপুর, ভোলা-আলেকজেন্ডার ও ভোলা-পটুয়াখালী রুট রয়েছে।
ভোলা নদী বন্দরের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।’
পটুয়াখালীতে রবিবার রাত থেকে বৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বইছে। রবিবার রাত থেকেই জেলার সব নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলেছে পটুয়াখালী নদীবন্দর।
পটুয়াখালী নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার সব নৌপথে ৬৫ ফুটের ছোট লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’
সাগর উত্তাল থাকায় নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ায় নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জসহ জেলার প্রতিটি স্থানে ঝড়ো বাতাস বইছে।
সোমবার ভোর থেকে জেলার উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। সমুদ্রে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট উচ্চতায় জোয়ার হচ্ছে।
এদিকে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, পাটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত দেয়া হয়েছে।