একজন মহিলা একজন বুজুর্গের কাছে এসেছিল তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে যে, তার স্বামী তাকে কথায় কথায় মারধর করে। বলল, হুজুর আমাকে এমন কোন তদবির দেন যাতে আমার স্বামী আমাকে আর মারধর না করে, আমার সাথে ভালো ব্যবহার করে। হুজুর তাকে এক বোতল পানি পড়া দিয়ে বলল যখনই তোমার স্বামী তোমাকে মারধর করবে তখনই এই পানি তোমার মুখের মধ্যে রেখে দিবে, খবরদার এইপানি গিলতেও পারবেনা এবং ফেলতেও পারবেনা যতক্ষণ না তোমার স্বামী চুপ হয়ে যায়।
তো মহিলা সেই পানি নিয়ে বাসায় যায় এবং হুজুরের কথা মত আমল শুরু করে যখনই তার স্বামী তাকে মারতে আসে তখনই সে বোতল থেকে পানি মুখে নিয়ে বসে থাকে এবং খুব সতর্কতার সাথে মুখের পানিকে সামলে রাখে যাতে পানি পড়ে না যায় অথবা পেটের মধ্যে চলে না যায়। ফলে অনেক ইচ্ছে থাকা সত্বেও তার স্বামীর কথার কোনো জবাব দিতে পারেন না।
কিছুদিন পর সেই মহিলা সে বুযুর্গের কাছে এসে বলল হুজুর আমাকে কি পানি পড়া দিয়েছেন যে আমার স্বামী একদম ভালো হয়ে গেছে এখন আর আমার গায়ে হাত তোলে না বকাঝকাও করে না। হুজুর বললো দেখো এটা কোন পড়া পানি ছিল না এটা এমনি সাধারণ পানি ছিল। তুমি যখন এই পানি মুখে রেখে দিয়েছিলে তখন স্বাভাবিকভাবেই তোমার স্বামীর কোন কথাই জবাব দিতে পারনি। তাই তোমার স্বামী তোমার এই আমল দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল। এবং তার মধ্যে অনুসুচনা কাজ করেছে।
আসল কথা হল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যখন কথা কাটাকাটি হয় তখন একজনের উচিত চুপ থাকা তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই মন মালিন্য দূর হয়ে যায়। সে যে ভুল করেছে সে তা বুঝতে পারে।
মা-বোনদের সংশোধনের আমলী পদ্ধতি হল, জরুরী কথা ব্যতীত মুখ বন্ধ রাখা। কেউ ভাল বলুক বা মন্দ বলুক কোন অবস্থাতেই কথা না বলা। এতে করে স্বামীর অকৃতজ্ঞতা, জ্ঞানীর জ্ঞান বিলুপ্ত করা, লা‘নত-অভিশাপ, গীবত-পরনিন্দা ইত্যাদি অধিকাংশ কু-অভ্যাস দূর হয়ে যাবে। কেননা, যখন প্রয়োজনীয় কথার বাইরে মুখ বন্ধ করে রাখা হবে তখন এ সকল রোগের আকাঙ্ক্ষা দুর্বল আর নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। দ্বিতীয়তঃ একটা সময় নির্ধারণ করে নিয়ে তখন বসে বসে ভাববে যে, এই দুনিয়া আর কদিনের! একদিন তো এখান থেকে চলে যেতেই হবে। মৃত্যু এবং পরবর্তী বিষয় যথা, কবর, মুনকার-নকীরের প্রশ্ন, তার পরে কবর থেকে ওঠা এবং হিসাব-কিতাব, পুলসিরাত অতিক্রম করা ইত্যাদি বিষয়াবলী নিয়ে প্রতিদিন কিছু সময় গভীরভাবে চিন্তা করবে। এর ফলে দুনিয়া প্রীতি, ধন-সম্পদের মোহ, অহংকার, লোভ-লালসা ইত্যাদি আত্মার রোগ সমূহ দূর হয়ে যাবে। আর এজন্য আল্লাহ পাকের দরবারে দু‘আ জারী রাখাও উচিত।
(একজন আল্লাহওয়ালার জবান থেকে নেয়া)