প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের সচিবালয়ে প্রবেশে ফি আরোপ করতে চাচ্ছে সরকার। প্রবেশ ফি নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা গত মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এমন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়ররাও বাদ যাবেন না এ বিধান থেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রবেশে ফি থাকলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ সচিবালয়ে প্রবেশ করবে না। এতে মানুষের সমাগম কমানো যাবে। গাড়ির জটও থাকবে না এতো বেশি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রবেশ ফি আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সচিবালয়ে প্রবেশে প্রত্যেককে একটি কার্ড দেয়া হবে। মেয়াদ হবে এক বছর। মূলত ফি নির্ধারণ করা হবে এ সময়ের জন্য।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষ কষ্ট পায় এমন কিছু করবেন না: প্রধানমন্ত্রী
সূত্র আরও জানায়, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তিদের প্রবেশ ফি না লাগলেও অন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য বছরে তিন হাজার টাকা ফি দিতে হবে। জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের প্রবেশ ফি বছরে আড়াই হাজার টাকা, বেসরকারি ব্যক্তিদের প্রবেশ ফি বছরে পাঁচ হাজার টাকা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া সচিবালয়ে বেসরকারি গাড়ি প্রবেশে বছরে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ফি আরোপের কথা বলা হয়েছে। কার্ড হারিয়ে গেলে নতুন করে নিতে গেলেও টাকা দিতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের দুই হাজার টাকা এবং বেসরকারি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ ফি পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সচিবালয় নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে থাকা জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব ফিরোজ উদ্দিন খলিফা কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, সচিবালয়ে মানুষের সমাগম এবং গাড়ির জট কমাতে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানুষ মরছে, মশা মারতে পারছে না সিটি করপোরেশন: হাইকোর্ট
জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্যানুযায়ী, সচিবালয়ে মাত্র ১৭.৫৩ একর জমিতে ১১টি ছোট-বড় ভবন ও ছয়টি ক্যান্টিন রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন সভায় অংশ নেয়া সদস্য ও দর্শনার্থীসহ প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন সচিবালয়ে আসা-যাওয়া করেন। এছাড়া প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় হাজার গাড়ি প্রবেশ করে এবং বেরিয়ে যায়।
এ কারণে সচিবালয়ে প্রায়ই গাড়ির জট লেগে থাকে। গাড়ি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হিমশিম খেতেও দেখা যায়। এছাড়া সচিবালয়ে পার্কিং না করতে পেরে অনেকে সচিবালয়ের সামনের ভিআইপি সড়কে গাড়ি রাখেন। ব্যস্ত এ সড়কে পার্কিং করার কারণে প্রায়ই লেগে যায় যানজট লেগে থাকে।