ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া গ্রাহকেরা নিজেদের পাওনা টাকা ফেরত পাচ্ছেন। তবে ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়া একটু ধীরগতির। মোট ৩৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রাহকেরা পেত ৫৩০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত মোট ১৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রাহকদের ৩২৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে। এখনো ১৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা ফেরত পাননি গ্রাহকরা।
এ টাকা অবশ্য ২০২৩ সালের ১২ জুনের পর্যন্ত ৩৫টি ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানে পণ্য ক্রয়াদেশের বিপরীতে গ্রাহকদের টাকা আটকে ছিল। টাকাগুলো ই–কমার্সপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে লেনদেন পরিশোধকারী কোম্পানিতে (পেমেন্ট গেটওয়ে) আটকে ছিল এবং আছে।
গত ১২ জুন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘এসক্রো’ ব্যবস্থা চালু এবং গ্রাহকদের মামলা থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর টাকা সরকারি ব্যবস্থাপনা ছাড় করা হয়েছে। এ ব্যবস্থা হচ্ছে গ্রাহকের হাতে পণ্য পৌঁছানোর পর টাকা পরিশোধ নিশ্চিত করা। কিন্তু তা মেনে চলেনি অভিযুক্ত কোম্পানিগুলো অনেক কোম্পানির মালিকরা দেশের বাইরে অবস্থান করছে। গ্রাহকদের পাওনা ফেরত দেয়ার বিষয়টি দেখভাল করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল। এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান যখন দায়িত্বে ছিলেন, তখন পাওনা ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটালকমার্স সেল সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা যায়, টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া একটু ধীর হলেও ফেরত দেয়ার উদ্যোগের জন্য গ্রাহকরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রশংসার করছে। মাথায় রাখতে হবে যে ভবিষ্যৎ ই-কমার্স খাতের। তাই খাতটির প্রতি অবহেলা করলে আমরা পিছিয়ে পড়বে।
বুধবার সিনিয়র বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, যে পদ্ধতি দাঁড় করানো হয়েছে, তাতে গেটওয়েতে থাকা টাকা আগে-পরে সবাই ফেরত পাবেন বলে আশা করা যায়। তবে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে গ্রাহকদের সব টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে আটকে থাকা গ্রাহকের টাকা জমা রয়েছে মোট পাঁচটি পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানে। এগুলো হচ্ছে বিকাশ (৪ কোটি ১২ লাখ টাকা), নগদ (২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা), সফটওয়্যার শপ লিমিটেড (এসএসএল) ( ৯০ কোটি ৪২ লাখ টাকা ), সূর্যমুখী লিমিটেড ( ২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা ) ও বাকি ৩৮৮ কোটি ৫১ লাখ টাকার অর্থ ফস্টার করপোরেশন কাছে আছে ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রজানায়, ৩৫টির মধ্যে ২৯ টি ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ১৪৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা বেশি গ্রাহকের কোনো টাকাই ফেরত দেয়নি। ফেরত না দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিরাজগঞ্জ শপ, নিডস, টোয়েন্টিফোর টিকেট, ই-অরেঞ্জ, উইকুম, আকাশ নীল, আলাদীনের প্রদীপ, আস্থার প্রতীক ,উই কম, বগুড়া ই-শপ ডট কম, পল্লী ষ্টোর লিঃ , তানভীর এন্টারপ্রাইজ , ফানাম ডট কম , লাকসুরা এন্টারপ্রাইজ , ই-নিডসলিঃ , বাড়ির দোকান ডটকম ইত্যাদি।
(এইদিনএইসময়/০৮আগস্ট/এলএ)