জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথমবারের মতো রংপুর সফরে গিয়েছিলেন ১৯৭২ সালের ১১ মে। তখন রংপুরের কালেক্টরেট মাঠে লক্ষাধিক মানুষ এই মহান নেতাকে সংবর্ধনা দিয়েছিল। পরে বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ মুজিব।
সেদিন বঙ্গবন্ধুকে একনজর দেখতে ও তাঁর ভাষণ শুনতে রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী জেনিফার আলী এলি সহপাঠী ইয়াসমিনসহ অনেককে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন জেলার কালেক্টরেট মাঠে। তবে অনেক চেষ্টা করেও ভিড় ঠেলে তারা বঙ্গবন্ধুর কাছে যেতে পারেননি। কিন্তু তবুও হাল ছাড়েননি জেনিফার এলি। জানতেন বঙ্গবন্ধু সার্কিট হাউজে থাকবেন। তাই পরদিন সকালে স্কুল থেকেই আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে চলে যান সার্কিট হাউজে। সেখানেও বাধে বিপত্তি, গেটে বাধা দেয় পুলিশ। পরে অদম্য জেনিফার এলিসহ অন্যরা দেয়াল টপকে সার্কিট হাউজের বারান্দায় প্রায় বঙ্গবন্ধুর কক্ষের কাছে চলে যান এবং অবশেষে বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পান। ওই সময় বঙ্গবন্ধু স্নেহে জেনিফার এলির মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। যার খবর পরদিন প্রায় সব পত্রিকায় ছবিসহ ছাপা হয়েছিল।
সেই ঘটনার ৫১ বছর পর যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করলেন তার কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার রংপুরে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দিতে গিয়ে রংপুরের সেই সার্কিট হাউজেই এবার জেনিফার এলির মাথায় হাত রাখলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে বুকে জড়িয়ে নিলেন বর্তমানে ষাটোর্ধ্ব জেনিফারকে। পরে জেনিফার এলিও বঙ্গবন্ধুর স্নেহমাখা মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া সেই ছবি উপহার দেন সরকারপ্রধানকে। ভাগ্যবান জেনিফার এলিও পেলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পর তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসা।
এ ব্যাপারে জেনিফার এলি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ অনুভূতি বলে শেষ করা যাবে না। একেবারে কৈশোরে পেয়েছিলাম জাতির পিতার স্নেহ এবং ষাটোর্ধ বয়সে এসে পেলাম তাঁর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহ।’জেনিফার এলি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে নিয়েছেন। আমি খুবই খুশি। এজন্য আমি রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে কৃতজ্ঞ।
উল্লেখ্য, জেনিফার এলি ব্যক্তিগত জীবনে রংপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের রংপুর প্রতিনিধি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আশরাফ আলীর সহধর্মিণী।
(এইদিনএইসময়/৩আগস্ট/তাবী)