জাপানে জন্ম নেয়া দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর জিম্মায় থাকা এবং জাপানে যেতে পারবে বলে রায় দিয়েছেন ঢাকার পারিবারিক আদালত। এছাড়া দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফ যে মামলা করেছিলেন তা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
রবিবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। জাপানি মা নাকানো এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নাবালিকা দুই শিশু কোথায় থাকলে কল্যাণ হবে সে দিক বিবেচনায় রেখে এ রায় দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ২২ জানুয়ারি দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন একই আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় আজ রায় দেওয়া হলো। তারও আগে ১৫ জানুয়ারি তাদের বক্তব্য শুনে তা রেকর্ড করেন আদালত।
২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। আর ছোট মেয়ে থেকে যান জাপানে মা এরিকোর সঙ্গে।
তবে ওই দুই মেয়েকে জিম্মায় পেতে মহামারির মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। তবে ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়
এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেয়ার আদেশ দেন। এরপর এ দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে তার নিষ্পত্তি পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ দেয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে যায়।