৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার

আমলা রাজনীতিবিদ ব্যবসায়ী ও এমপিদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ এমপি মোকাব্বিরের

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img

গণফোরাম দলীয় সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেছেন, এই সংসদের বর্তমান এবং সাবেক অনেক সদস্য, অনেক আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ দেশের অর্থ লুটপাট করেছেন। আর এ অর্থে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বেগমপাড়া, সেকেন্ড হোম, থার্ড হোম তৈরি করেছেন।

রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় এই সদস্য এসব কথা বলেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এটা আমার কথা নয়। প্রতিনিয়তই এসব খবর আমরা গণমাধ্যমে দেখতে পাই। এই গত কয়েক দিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রে একজন আমলার বাড়ির খবর গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এই সেকেন্ড হোম নিয়ে কথা বললে দেখা যাবে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে। তাই আমি বিস্তারিত ঘটনায় যাব না।

তিনি বলেন, যেভাবে খুশি সেভাবেই লুটপাট করছে, তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না। আজ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তরা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যের কার্ড দিচ্ছে- এখানে মারাত্মক অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি হচ্ছে। এই কার্ডগুলো ৮০ ভাগ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে, চাইলে ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। দুর্নীতিবাজ ও অসাধু ব্যবসায়ী সব সময় মানুষের কষ্টকে পুঁজি করে লুটপাট করে।

তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব- আগেও বলেছি আজকেও দাবি করছি এসব দুর্নীতিবাজ, লুটেরাদের আইনের আওতায় এনে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে কয়েকজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজ, লুটেরাকে সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করেন। আমি হলফ করে বলতে পারি, দুর্নীতি অনেক কমে যাবে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী আপনি জাতির পিতার কন্যা সাধারণ মানুষের কষ্টের কথাগুলো মাথায় নিয়ে বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।

মোকাব্বির খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইংল্যান্ডে আমার একটি সেকেন্ড হোমের কথা বলেছেন। হ্যাঁ, যুক্তরাজ্যে আমার সেকেন্ড হোম আছে, সেটা গোপনীয় কিছু নয়। আর এটা নিয়ে আমার বিব্রত হওয়ারও কিছু নেই। আমার সৌভাগ্য হয়েছে, আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা, নাম বলতে চাই না, এখানেও আছেন, তারা আমার এই সেকেন্ড হোমে গিয়েছেন। তবে আমি বলতে চাই, লুটপাটের অর্থ তো নয়ই, এমনকি বাংলাদেশ থেকে পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রির কোনো টাকা নিয়েও সেই সেকেন্ড হোম আমি তৈরি করিনি। আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে আমি ইংল্যান্ডে অত্যন্ত সফলভাবে ব্যবসা করে সেই বাড়ির মালিক হয়েছি। এখন আমার পরিবার সেই বাড়িতে বসবাস করছে। আমি ইংল্যান্ডে ব্যবসা করতাম- একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে সেখানে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছি। বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করেছি।

তিনি আরও বলেন, এই সংসদে অনেকেই, এমপি হওয়ার সুবাদে অনেকেই হয়তো শত শত বা হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। একাধিক গাড়ি, বাড়ি, অট্টালিকার মালিক হয়েছেন। কিন্তু যেদিন থেকে আমি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করলাম সেদিন থেকে আমার জীবনের মোড় পালটে গেল। বিশেষ করে এই সংসদে সদস্য হওয়ার পর জীবনের বিলাসিতা ছেড়ে নিজেকে জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছি। চেষ্টা করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার দর্শনকে ধারণ করে একজন পরিছন্ন রাজনীতিবিদ হতে।

সর্বশেষ নিউজ