১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার

জামায়াতে ইসলামী স্বপ্ন দেখে এদেশে আল্লাহর দ্বীনকে কায়েম করার : অধ্যাপক মুজিবুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img
spot_img

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির, সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার স্বপ্ন দেখে।
এই কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা প্রতিটি মুসলমানের নৈতিক ও ঈমানী দায়িত্ব। এজন্য দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য আমাদের জান ও মালের কুরবানী পেশ করতে হবে।
কুরআনের সবগুলো বিধানই সমাজে কায়েম করা ফরজ। কোনো একটি বিধান অস্বীকার করলে কাফির বলে গণ্য হবেন।

তিনি বলেন, মুত্তাকিদের জন্য বর্ণিত সব বিধান পালন করা অত্যাবশ্যকীয়। এসব বিধানকে ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক ও সমাজ জীবন এবং
রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল মুত্তাকিদের কাজ। এ পথে হয়তো আমরা বিজয়ী হবো নতুবা আমাদের জীবন চলে যাবে তবুও কুরআনের এ পথ থেকে আমরা বিচ্যূত হবো না।
আধুনিক বিশ্বের সকল সংকট উত্তরণে রাসুলের (সঃ) আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। রাসুল (সাঃ) এর আদর্শের আলোকে বাংলার এই সবুজ ভূখন্ডে জামায়াতে ইসলামী
একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত সিরাত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, প্রিয় রাসূল (সা) যা করতে বলেছেন এবং যা নিষেধ করেছেন তা মূলত আল্লাহরই কথা। কারণ তিনি আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোনো কথা বলেননি।
উম্মাহকে রাসূলের সকল নির্দেশনা পালন করার হুকুম মূলত আল্লাহর পক্ষ থেকেই।
যেখানে হিজরত করা প্রয়োজন ছিলো সেখানে সাহাবায়ে কেরাম নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তা করেছেন এবং যখন জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ বা আন্দোলন-সংগ্রাম করার সময় হয়েছিল
তখন নব্য মুসলিম সাহাবা আজমাইন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এটাই ঈমানের জজবা, এটাই মুমিনের জিন্দেগী। অর্থাৎ একজন মুমিন দ্বীনকে বিজয়ের জন্য নিজের জান ও
মালকে কুরবানি করে হলেও সবার আগে এগিয়ে আসবে। এটাই হচ্ছে সত্যিকার সাহসী বীরের কাজ। এটাই হলো রাসূলের সিরাতের শিক্ষা।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম,
কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন,
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ। আরও বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির যথাক্রমে আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী
সেক্রেটারি যথাক্রমে মু. দেলাওয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান। উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নাতে রাসুল (সাঃ) সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন মহানগর শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যবৃন্দ।

মাওলানা এটিএম মাসুম বলেন, সাহাবায়ে কেরামগণের দূরদর্শিতা ও সাহসীকতার কাছে বাতিলেরা মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছিল।
আমদের সোনার বাংলাদেশে দিনকে দিন অশান্তি ও বিপর্যয় কেবল বেড়েই চলেছে। সেখানে শান্তির সুবাতাস নিয়ে আসতে পারে কেবলমাত্র ইসলাম।
প্রিয় রাসূল ছিলেন নির্ভীক সাহসী। তার সিরাতের দিকে তাকালে দেখতে পাই তিনি বীরত্বপূর্ণ জীবনের অধিকারী ছিলেন।
তার উম্মত দাবি করা কেউ আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করতে পারে না, অন্য কাউকে ভয় করা তাঁর সিরাতের পরিপন্থি।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জাহেলিয়াতে পরিপূর্ণ একটি সমাজকে পরিশুদ্ধ করা আল্লাহর রাসূলের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জের ছিলো।
তারপরও তিনি কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সেই সমাজকে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমরাও রাসুলের সেই আদর্শ সমাজে কায়েম করতে চাই।
সাহাবায়ে কেরামগণ দ্বীন বিজয়ের জন্য যেভাবে শপথ নিয়েছিলেন, দৃঢ় চিত্ত ছিলেন। উদ্ভুত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা যেভাবে অটল অবিচল ছিলেন।
বর্তমান বাংলাদেশে দ্বীনকে বিজয়ের জন্য যে কোন পরিস্থিতিতে জামায়াতের কর্মীদেরও সেভাবে অটল অবিচলভাবে টিকে থাকতে হবে।
পৃথিবীর সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান দিতে পারে ইসলাম ও রাসূলের সুন্নাহ। তিনি মানবতার মুক্তির জন্য সবাইকে ইসলাম ও রাসূল সা:-এর সুমহান আদর্শের দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।

(এইদিনএইসময/০৭অক্টোবর/জেএস)

সর্বশেষ নিউজ