অনেকে বাচ্চাদের রূপকথার বই পড়তে দেন না বা পড়ে শোনান না। কেননা, রূপকথা হলো তাঁদের মতে ‘মিথ্যা কথা’।
অবাস্তব, অলীক, আজগুবি গাঁজাখোরের গল্পের কোন মানে যাঁরা খুঁজে পান না বরং মনে করেন যে, এতে বাচ্চার মনে মিথ্যা বলার বা বানিয়ে কথা বলার প্রবণতা তৈরি হয়, তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলি।
আব্বাসী খিলাফতের সময়ে বড় আলেমদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইবনুল মুক্বাফফা’। তিনি পারস্য ‘ রূপকথার বই’ আলফু লাইলাতিন ওয়া লাইলাহ(আলিফ লায়লা বা এরাবিয়ান নাইটস নামে যাঁকে আমরা চিনি) আরবী ভাষায় অনুবাদ করেন। আরো অনুবাদ করেন হিন্দুস্তানের পশুপাখির গল্পের বই, যেখানে রূপকথার গল্পের মতই পশুপাখি কথা বলে। বইয়ের নাম কালিলাহ ওয়া দিমনাহ। শুধু অনুবাদই করেননি তিনি, গল্পগুলোর অপরিসীম গুরুত্বও তুলে ধরেছেন মুখবন্ধে।
জাহেয ছিলেন একই সময়ের আরেক বড় স্কলার। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পণ্ডিতদের একজন ছিলেন জাহেয। তিনিও তাঁর ভাষায়” আজব আজব কাহিনী শুনে বুদ্ধিকে ধার দেয়ার” গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।
গত শতাব্দির এডুকেশনালিস্টদের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্কলার Charlotte Mason বলেছেন, যে বাচ্চারা রূপকথা কম শোনে তারা বানিয়ে কথা, মিথ্যা কথা বরং বেশি বলে, রূপকথার ক্ষুধা তারা মিথ্যা বলে মেটানোর চেষ্টা করে। মন কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়াতে চায় যে বয়সে, সে বয়সে রূপকথার পুষ্টিকর খাবারের চেয়ে কোন অংশে কম না।