২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
--বিজ্ঞাপন-- Bangla Cars

পুরান ঢাকার বাড়িগুলো একেকটা কারাগার

আতাউর রহমান
spot_img

 

বাড়িওয়ালার শেষ অস্ত্রঃ ভালো না লাগলে বেরিয়ে যান…

আমি যে বাসাটায় থাকি, ৬ মাস ধরে দাঁড়োয়ান চলে গেছে। ৬ হাজার টাকা বেতনে তার থাকার কথাও নয়। এরপর থেকে বাসায় ঢুকতে বড় ভোগান্তি। অবশ্য পানির মোটর চালু, গেটে তালা বা সিঁড়ি পরিষ্কার এখন বাড়ি মালিকই করেন। কিন্তু রাত ১১ টার ভেতর বাসায় ঢুকতে হবে, নইলে বাইরে!

আজ রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঘটল এক কান্ড! জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যাবো। কিন্তু সাড়ে ১১ টা পার হওয়ায় মহান বাড়ি মালিক গেট খুলবেন না। তারে বললাম, দাঁড়োয়ান রাখতে। তার উত্তেজিত জবাব, আমার কথায় কেনো দাঁড়োয়ান রাখবে?

আমি বললাম, আমি তো টাকা দিয়ে সার্ভিস নিচ্ছি, আমার সুবিধা তো আপনার দেখতে হবে।

তার সাফ জবাব, রাত ১১ টায় বাসায় ঢুকে বের হওয়া যাবে না বা ১১ টার পরে ঢুকা যাবে না!

আমি তাকে বিনয়ের সঙ্গে গলা নামিয়ে কথা বলার অনুরোধ করলেও তিনি চেঁচাচ্ছিলেন বেশ।

তাকে মনে করিয়ে দিয়ে বললাম, বাসা ভাড়া নেওয়ার সময়ে আমি যে পেশাগত কারণে মধ্যররাতে ঢুকবো বা বের হবো-তাকে তা অবগত করা ছিল। তিনি তা স্বীকার গেলেও দাঁড়োয়ান পাওয়া যাচ্ছে না অজুহাতে সেই সুযোগ দিতে নারাজ।

শেষ পর্যন্ত বললাম, আমাকে একটা চাবি দিতে, তিনি তা দিতেও নারাজ। তাকে বললাম, তাহলে আমার কাজ শেষ হলে বাসায় ঢুকবো, প্রয়োজনে বের হবো। তাহলে সে পর্যন্ত তাকে তালা খোলা-বন্ধের কাজটি করতে হবে! তিনি এবার রেগে আগুন!

তাকে বললাম, সেটা না পারলে দাঁড়োয়ান রাখেন, কারণ তিনি সেই খাতে সার্ভিস চার্জ নিচ্ছেন। নতুন বছরে ভাড়াও বাড়িয়েছেন এক হাজার টাকা।

যুক্তিতে না টিকে তিনি বললেন, ভালো না লাগলে বাসা ছাড়েন।

আমিও তাকে মুখের উপরই বললাম, বাড়িওয়ালাদের এটাই শেষ অস্ত্র!

আসলে পুরান ঢাকার বাড়ি মালিকদের কেউ কেউ বাসাগুলোকে একেকটা কারাগার বানিয়ে ফেলেছেন। আপনি ভাড়া দিয়ে থাকলেও প্রয়োজনে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবেন না। নিচে মূলগেটে তালা দিয়ে চাবি রাখবে তার কাছে, আপনি রাতবিরাতে বিপদে পড়লেও বের হতে পারবেন না, এটা ভয়ঙ্কর।

সর্বশেষ নিউজ