১৮ জানুয়ারি ২০২৫, শনিবার

সাবেক আইজিপিকে নৌকার প্রার্থী সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজির হুঁশিয়ারি

ডেক্স রিপোর্ট
spot_img
spot_img

সাবেক আইজিপিকে নৌকার প্রার্থী সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজির হুঁশিয়ারি

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর সদর ঈদগাহ মাঠে নির্বাচনী জনসভা

কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই আসনে আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থী সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আবদুল কাহার আকন্দ।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর সদর ঈদগাহ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় আবদুল কাহার আকন্দ বলেন, জনসভার জনসমাগম-ই বিজয়ের বার্তা বহন করে। তিনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে আসনটি উপহার দিয়ে আসনের দুই উপজেলায় বিরাজমান অশান্তি দূর করে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিবেন। এলাকার অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করবেন। বৈপ্লবিক উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে নিজেকে নিবেদিত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে।

কাহার আখন্দ আরও বলেন, কোনোপ্রকার ষড়যন্ত্র এবং গুজব-ভাঁওতাবাজিতে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা যে বিভ্রান্ত হয় না, তা পাকুন্দিয়া উপজেলা সদরের ঈদগাহ ময়দানের বিশাল উপস্থিতি-ই তার প্রমাণ। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও এর প্রতিফলন ঘটবে বলে দাবি করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুল কাহার আখন্দ আরও বলেন, বর্তমান এমপি সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের বাবা এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন রাজাকার ছিলেন। আর এজন্যই তারা এখন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আবদুল কাহার আকন্দ বলেন, ‘আর এক পা আগাবেন না। হয় নৌকার সঙ্গে থাকুন, না হয় কটিয়াদী ছেড়ে ঢাকা চলে যান। আর যদি আপনি একটি কথা নৌকার বিরুদ্ধে বলবেন, তাহলে আপনার বাড়ি ঘেরাও করা হবে।’

এর আগে সোমবার বিকেলে এক-ই মাঠে নির্বাচনী জনসভা করেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন। তার জনসভা মঞ্চে প্রায় সব কজন আওয়ামী লীগ নেতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আর তাদের উপস্থিতিতেই তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করবেন বলে অঙ্গীকার করেন। আর এ কারণে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবদুল কাহার আখন্দ মঙ্গলবারের নির্বাচনী জনসভা নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয় এলাকাবাসীর।

কিন্তু মঙ্গলবার নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবদুল কাহার আখন্দের জনসভায় কিংবা মঞ্চে বর্তমান এমপি সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের সমর্থক হিসাবে পরিচিত এসব জনপ্রতিনিধি আওয়ামী লীগ নেতাদের দেখা না গেলেও বিপুল লোকসমাগম ঘটে।

মঙ্গলবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পৌর সদর ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনী জনসভায় সভাপতিত্ব করেন, পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু।

জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও জেলা জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবু নাসের ফারুক মোহাম্মদ সঞ্জু, পাকুন্দিয়া উপজেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবীর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোতায়েম হোসেন স্বপন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য এ কে এম দেলোয়ার হোসেন, পাকুন্দিয়া পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম আখন্দসহ আরও অনেকে।

উল্লেখ্য, কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-২ আসন। এখান থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, আবদুল কাহার আকন্দ ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. সোহরাব উদ্দিন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এর মধ্যে আবদুল কাহার আকন্দকে মনোনয়ন দেয়া হয়। মো. সোহরাব উদ্দিন ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। নূর মোহাম্মদ মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে এই আসনের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব) আখতারুজ্জামানের ট্রাক প্রতীককে সমর্থন জানান। এ নিয়ে এই আসনের নির্বাচনের মাঠ গরম আছে। ফলে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ আলোচিত তিন প্রার্থীতে বিভক্ত হয়ে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে যোগ করছেন।

সর্বশেষ নিউজ