১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার

পাকিস্তানে ক্ষমতায় কি ফের আসছেন নওয়াজ শরিফ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
spot_img

দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি, গার্ডিয়ান এবং এএফপিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তিনবার ক্ষমতাচ্যুত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ আজ ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদে দেশের প্রধান নির্বাহী হিসেবে ফিরে আসবেন। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দ্য নিউজের বরাতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জিও নিউজ।

নওয়াজ শরিফ, যিনি তিনবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন এবং গত বছর স্ব-ঘোষিত নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিলেন, তিনি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ সব ধরনের অভিযোগ ও মামলা থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে সুযোগ পাবেন। যেসব কারণে তিনি ২০১৭ সালে তার প্রধানমন্ত্রীত্বও হারিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নওয়াজ শরিফকে সাবেক আরেক প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরান খানের কট্টর সমর্থকদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ব্যাপক জনপ্রিয় ইমরান বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। গোপন সাইফার মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড, তোশাখানা মামলায় ১৪ বছর এবং অবৈধ বিয়ের মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন।

 

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর প্রধান যদি ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জয়ী না হন তাহলে অবাক হতে হবে।

এদিকে, ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গত সপ্তাহে করাচিতে দেশটির অভিজাত ব্যবসায়িদের সমাবেশে উপস্থিত অনেককে জানিয়েছেন, তারা একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট এবং এরপর একটি দুর্বল ও ভঙ্গুর জোট সরকারের সম্ভাবনা দেখছেন। বেশিরভাগই ধারণা করছেন, সেই জোট সরকারের নেতৃত্বে থাকবেন নওয়াজ শরিফ বা তার ছোট ভাই শেহবাজ শরিফ যিনি বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপকার এবং এর আগের মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

‘নওয়াজ শরিফ যদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। একটি হচ্ছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং অন্যটি রাজনীতিতে প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্ক বজায় রাখা। আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের ফেলো মাদিহা আফজালের বরাতে এমনটি ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।

সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রচারণার ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছেন ইমরান খানের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফ। প্রবীণ রাজনীতিক শরিফ নতুন মেয়াদে একটি শক্তিশালী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী লড়াই করছেন আত্মঘাতী হামলায় নিহত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।

সাবেক সিনিয়র ব্রিটিশ কূটনীতিক এবং কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক উইলাসি-উইলসির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শরীফ একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক যিনি সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারদর্শী। তিনি ভারতের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চান।’ তবে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে ভোটের হার অনেক কম হতে পারে।

এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিকভাবেই সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান। যদিও সশস্ত্র বাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে না বলে দাবি করে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে নওয়াজ শরিফকে জেনারেলরা সমর্থন দিচ্ছেন। এর আগে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তারা ইমরান খানকে বেছে নিয়েছিলেন। দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ ও ইমরান একই অভিযোগ করেছিলেন। সামরিক বাহিনীর ইশারায় ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন তারা। তবে বরাবরের মতো সামরিক বাহিনী তা অস্বীকার করে আসছে। নিবন্ধটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

সর্বশেষ নিউজ