ভোট গণনা শুরুর একদিন পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ফল ঘোষণা শেষ হয়নি। তবে, সর্বশেষ তথ্য বলছে কারাবন্দি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই জয় পেয়েছেন বেশি আসনে। তাদের পেছনে রয়েছে নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ-এন (পিএমএলএন) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
এ অবস্থায় পিটিআই ও পিএমএলএন উভয় দলই জয়ের ঘোষণা দিয়ে সরকার গঠনের কথা বলছে। তবে ইমরান অনুসারীদের পেছনে ফেলে গদিতে বসতে তোড়জোড় শুরু করেছেন নওয়াজ শরিফ। আর এজন্য তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পিপিপির কাছে জোট গঠনের জন্য ধর্না দিচ্ছেন তিনি।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন বলছে, শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতেই নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ আসন পাওয়া পিপিপি’র কো-চেয়ারম্যান আসিফ জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন পিএমএলএন প্রধান।
এর আগে, সন্ধ্যায় পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্রদের চেয়ে পিছিয়ে থেকেও বিজয় ভাষণ দেন নওয়াজ। লাহোরে পিএমএল-এনের কেন্দ্রীয় অফিস থেকে দেওয়া বিজয় ভাষণে তিনি বলেন, জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে পিএমএল-এন সবচেয়ে বড় দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। পিএমএল-এন পাকিস্তানকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে দাবি করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতেও তার দল দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাবে।
তবে ভাষণে পিএমএল-এন নেতা স্বীকার করেন সরকার গঠনের জন্য তার দল প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। তাই জোট সরকার গঠনের জন্য অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে খুব শিগগিরই আলোচনা শুরু করবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে আল জাজিরার তথ্য বলছে ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৫০টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৯টি আসন। আর নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ-এন (পিএমএলএন) জয় পেয়েছে ৭১টি আসনে। বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৩টি আসন।
এছাড়া অন্যান্য দল এবং স্বতন্ত্ররা পেয়েছে ২৭টি আসন। একটি আসনের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। আরও ১৫ আসনের ফলাফল ঘোষণা বাকি এখনও। বাকি এ আসনগুলোর সবকটিতে জিতলেও সরকার গঠনের জন্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত হবে না কোনও দলেরই। কারণ, এই শর্ত পূরণ করতে হলে প্রয়োজন ১৩৪টি আসন।
এদিকে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে নারী ও সংখ্যালঘু মিলিয়ে ৭০টি সংরক্ষিত আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি আসন নারীদের জন্য এবং ১০টি সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ। যে দল সরকার গঠন করবে তাদের প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে এগুলো বণ্টন করা হয়।
পিটিআই দল হিসেবে নির্বাচনের সুযোগ না পাওয়ায় দলটির সমর্থিত প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সংরক্ষিত আসনের এই কোটার সুবিধা পাবে না। এ অবস্থায় পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্ররা কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন, তার জন্য আরও ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।