পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের চূড়ান্ত বিচার দ্রুত শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, ‘পিলখানায় একটি বড় হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। বিচারের জন্য এগুলোকে একটা কাঠামোতে আনতে হবে। তদন্ত শেষ করা একটা বিরাট কর্মকাণ্ড ছিল। এগুলো শেষ হয়েছে। আপনারা দেখেছেন প্রাথমিক একটা বিচার হয়েছে। কাজেই চূড়ান্ত বিচার হয়তো অল্পদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, আমরা আশা করছি।’
আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে পিলখানায় শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ আমাদের বিচারিক কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করছে।
আশা করছি খুব শিগগির চূড়ান্ত বিচারটাও আমরা দেখবো।’
নিহতদের অনেক স্বজন বৃদ্ধ হয়েছেন, তারা আদৌ বিচার দেখে যেতে পারবেন কি না- এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমিও সেটি বলি, যা কিছু হোক যেন দ্রুতই হয়। তবে কবে শেষ হবে সেটা বিচারকরাই জানেন। আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আপনারা জানেন আমাদের আদালত স্বাধীন, তারা একটি ন্যায্য বিচার করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে কারও গাফিলতি নেই। আমি আগেই বলেছি এখানে বিরাট ধরনের হত্যাকাণ্ড ছিল। সবগুলো সঠিকভাবে তদন্ত শেষে বড় ধরনের বিচারকার্য ছিল। এই সবেই সময় লেগেছে।’
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এই দিনে সকাল ৯টা ২৭ মিনিটের দিকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার চলাকালে হলে ঢুকে পড়েন একদল বিদ্রোহী সৈনিক। তাদের একজন তৎকালীন মহাপরিচালকের (শাকিল আহমেদ) বুকে বন্দুক তাক করেন। সূচনা হয় ইতিহাসের সেই নৃশংসতম ঘটনার।
তাদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়তে থাকেন সেনা কর্মকর্তারা। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। পরে পিলখানার ভেতরে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। ৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, এক সৈনিক, দুই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ বিজিবি সদস্য ও পাঁচ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন।
বহুল আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় (পিলখানা হত্যা মামলা) ১৩৯ জনের ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি কোনো মামলার। দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অপর মামলাটি এখনো বিচারিক (নিম্ন) আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের গণ্ডি পার হয়নি। হত্যা মামলার আপিল শুনানি কবে শুরু হবে, তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।