১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার

খেলতে গিয়ে কন্টেইনারে আটকে পড়ে যেভাবে মালয়েশিয়া গেল কিশোর ফাহিম

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img
spot_img

দুই মাস আগে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের বাড়ি থেকে পালিয়ে চট্টগ্রাম চলে যায় ১৬ বছর বয়সী রাতুল ইসলাম ফাহিম। পরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার ছলে জাহাজে থাকা কনটেইনারের ভেতরে ঢুকলে, চট্টগ্রাম থেকে মালয়েশিয়ায় পৌঁছে যায় ফাহিম।

মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এমভি ইন্টিগ্রা জাহাজটি গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালয়েশিয়ার পোর্ট ক্লাং বন্দরের ওয়েস্ট পোর্টের উদ্দেশে রওনা হয়। ১৭ জানুয়ারি ছয়দিন পর জাহাজটি কেলাং বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছালে সেখানকার কর্মীরা কনটেইনারের ভেতরে শব্দ শুনতে পান। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানালে ১৭ জানুয়ারি জাহাজটি জেটিতে ভেড়ানোর অনুমতি দেয়া হয়।

এরপর সন্দেহজনক কনটেইনার থেকে কিশোর ফাহিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে একটি এনজিও’র সেইফ হোমে রাখা হয় ফাহিমকে। সেখানে তার দেখাশোনা করতেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্তকর্তারা।

কনটেইনার থেকে ফাহিমের বেরিয়ে আসার কয়েকটি ভিডিও মালয়েশিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয় সরকার। হাইকমিশনের শ্রম শাখা থেকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ফাহিমের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ফাহিম কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের মো. ওমর ফারুক ও রোকেয়া বেগমের ছেলে। পেশায় দিনমজুর ফারুকের তিন ছেলের মধ্যে ফাহিম সবার বড়।

গত মঙ্গলবার রাতে ফাহিম মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছে বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গোলাম সারোয়ার। ফাহিমের দেশে ফেরার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতাসহ বিদায়ের সময়ে বিমানবন্দরে নিজে উপস্থিত থাকায় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফ উদ্দিন নাসুশন ইসমাইলকে ধন্যবাদ জানান হাইকমিশনার।

এদিকে ফাহিমকে বিদায় জানাতে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিমানবন্দরে যাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিশোর ফাহিমের ভ্রমণের নথি সম্পন্ন করায় বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ফাহিমকে ভালোভাবে দেখভাল করার জন্য বেসরকারি সংস্থা চৌ কিট ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান। কিশোর ফাহিম কোনো মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত নয় বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

গত মাসের শুরুতে বাংলাদেশ সফরের সময় ফাহিমকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই খোদ সাইফ উদ্দিন বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে ফাহিমের অভিবাসন বিভাগের সব প্রক্রিয়া শেষ করে তাকে ঢাকায় পাঠান।

সর্বশেষ নিউজ