প্রবাসী স্বামী ভালোবেসে দেশে আসার সময়ে স্ত্রীর জন্য নিয়ে এসেছিলেন এন্ড্রোয়েড ফোন। আর সেই এন্ড্রোয়েড ফোনেই ধরা পড়লো স্ত্রীর পরকীয়ার ঘটনা। পরে নাটকীয় কায়দায় ডিভোর্স দেন স্ত্রীকে।
এমনই ঘটনা ঘটেছে বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার গুনাহার ইউনিয়নে।
প্রবাসী স্বামী কিংবা স্ত্রী কারো নাম উল্লেখ না করে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন গুনাহার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর দেয়া স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল এইদিন এইসময়ের পাঠকদের জন্য-
প্রবাসী স্বামী তার স্ত্রীকে ভীষণ ভালোবাসত। ছুটিতে দেশে আসার সময় দামি এন্ড্রয়েড ফোন স্ত্রীর জন্য নিয়ে এসেছিল। সৌন্দর্যের সাথে আনুগত্যও বেশ!
ফিরে যাওয়ার বেলায় স্ত্রীর এন্ড্রয়েড ফোনের ফটোজ অপশনে গিয়ে ফটো শেয়ারিং-এ স্বামী তার নিজের ইমেইল যুক্ত করে দিয়েছিল।
বাকিটা ইতিহাস!
ডিভোর্স হয়ে গেল। স্বামী হু হু করে কেঁদে প্রবাস থেকেই ডিভোর্স দিয়ে দিলো।
কোনো স্বাক্ষ্য-প্রমাণ লাগেনি, কোনো সময় লাগেনি।
একটু থ্রিল ছিল ঘটনায়।।
স্বামী আমাদের কয়েকজনকে তার বাড়িতে ডেকেছিল প্রবাস থেকেই। দুপুরে লাঞ্চ করাবে বলে। স্ত্রীর বাপের বাড়ির আত্মীয়দেরও খাবারের দাওয়াত দিয়ে ডেকেছিল। দুপুরে অসাধারণ সব আইটেম। আনন্দ হৈ-হুল্লোড় করে আমরা খেয়েছি। দুই পরিবারের সদস্যসহ আমরা প্রায় ২০ জন।
স্বামী তার স্ত্রীর এন্ড্রয়েড ফোনে ভিডিও কল দিয়ে আমাদের সাথে কথা বলছিলেন। এই সেই… অনেক কথা। আমাদের মাদরাসার নির্মানাধীন মসজিদে একটা এমাউন্ট দান করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। শশুরবাড়ির লোকজনের সাথে হাসিমুখে কথা বললেন। দুআ চাইলেন।
হঠাৎ তার শ্যালককে বললেন—লাউডস্পিকার অন করো। লাউডস্পিকার অন করার পর আমরা শুনলাম—আমাকে কী সবাই শুনতে পাচ্ছেন? আমরা বললাম—জি।
তখন তিনি বললেন—’চেয়ারম্যান এবং উপস্থিত সবাইকে স্বাক্ষী রেখে এই মূহুর্তে আমি আমার স্ত্রীকে এক তালাক, দুই তালাক এবং তিন তালাক প্রদান করলাম। কেন তালাক দিলাম, সেটা জানতে চাইলে আমার সদ্য সাবেক স্ত্রীর এন্ড্রয়েড ফোনই উত্তর দিবে। কষ্ট করে আমার বাসায় আপনারা এসেছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। দুআ করবেন আমার জন্য। আর ফোনটা চেয়ারম্যান সাহেব একটু হাতে নিন।’ এরপর কান্নার হু হু শব্দ।
আমরা হতভম্ব। একেবারে নিরবতা। কিংকর্তব্যবিমূঢ়!
কে যেন ফোন আমার হাতে দিলো। হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কয়েকটা ছবি এলো।
আসলে আর বর্ণনা করার মতো অবস্থা নাই। মেয়েটা তালাক পেয়ে ভরকেও গেল না। যেন এমনটাই হওয়ার ছিল। বরং সদ্য সাবেক স্বামীকে বেশ গালাগালি করে দোকানে চাপাচ্ছিল।
আমরা আর সেখানে থাকার প্রয়োজন মনে করছিলাম না।
কী জন্য এলাম আর কী হলো এটা?