১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার

মেহেদি ব্যবহারে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

ডেক্স রিপোর্ট
spot_img
spot_img

ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ঈদের দু’এক দিন আগে থেকেই নারীদের মেহেদি উৎসব শুরু হয়ে যায়। চাঁদরাতে মেহেদি না পরলে যেন উৎসবের আমেজই আসে না। মেহেদি পরা নিয়ে ছোট ভাইবোনদের ছোটাছুটি, কার মেহেদির রং কত বেশি গাঢ় হলো তা নিয়ে প্রতিযোগিতা, মেহেদির কড়া গন্ধ -এসবই যেন মধুর শৈশবের কথা মনে করিয়ে দেয়।

এরই মধ্যে অনেকে নিশ্চয়ই বাজার থেকে বিভিন্ন কোন মেহেদি কেনার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। তবে হাতের কাছে যেকোনো মেহেদি পেলেই কম মূল্যে কিনবেন না। এতে মারাত্মক বিপদ হতে পারে।

বাজারে নানা ধরনের মেহেদি আছে। ঈদের আগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে কেমিক্যালযুক্ত নকল মেহেদি বিক্রি করে থাকেন। এর ফলে এতসব মেহেদির মধ্যে কোনটি আসল আর কোনটি নকল তা যাচাই করে কেনা বেশ কঠিন। এসময় ফুটপাতের মার্কেটগুলোতে রাস্তায় ভ্যানে করে বিক্রি হয় কম দামে বাহারি সব মেহেদি। আবার বিভিন্ন শপিংমলেও পাওয়া যায়।

তবে বেশিরভাগ মানুষ কোনটি ভালো আর কোনটি কেমিক্যালযুক্ত তা যাচাই না করেই কিনে ফেলেন। ফলে অনেক সময় দেখা যায় এসব মেহেদি ব্যবহারে ত্বক পুড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে অ্যালার্জি, র‌্যাশ বা ফোস্কা পরার মতো ঘটনা ঘটে।

তাই মেহেদি কেনা ও ব্যবহারের আগে সতর্ক থাকা জরুরি। জেনে নিন মেহেদি লাগানোর আগে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন-

১. খাঁটি মেহেদির রং কখনো কালো হয় না। সব ধরনের কালো মেহেদিতেই ভেজাল বা কেমিক্যাল মেশানো থাকে।

২. আসল মেহেদি কখনোই ৫ মিনিট বা তার কম সময়ে গাঢ় রং দেয় না। ২৪-৪৮ ঘণ্টা পর আসল মেহেদির রং গাঢ় হতে থাকে।

৩. মেহেদি কেনার সময় মেয়াদ দেখে কিনুন। পুরনো হলে আবার রং না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৪. পার্লারে মেহেদি লাগাতে গেলে দেখে নিন নতুন মেহেদি দিচ্ছে কি না। প্রয়োজনে নিজেই মেহেদি কিনে নিয়ে যান।

৫. ফ্রিজে রাখা মেহেদি ব্যবহারের আগে কিছুক্ষণ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিন। তারপর হাতে লাগান।

৬. শিশুদের হাতে দেওয়ার জন্য অবশ্যই পাতা মেহেদি বেটে লাগান। এতে শিশুর কোমল হাত সুরক্ষিত থাকবে।

৭. মিনিটেই গাঢ় লাল রং পেতে এখন অনেকেই বিভিন্ন মেহেদি ব্যবহার করে থাকেন। এগুলো ত্বক এমনকি স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।

৮. যেকোনো মেহেদি ব্যবহারের আগে অল্প পরিমাণে হাতে অথবা কানের পেছনে ব্যবহার করুন। এতে অ্যালার্জি হলে জ্বালা-পোড়া করবে বা চুলকাবে। এমন হলে ওই মেহেদি ব্যবহার করবেন না।

৯. মেহেদি থেকে অ্যালার্জি হওয়ার কারণ হলো এতে মেশানো পিপিডি কালি। এই কেমিক্যাল ত্বকের মারাত্মক অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। এছাড়া এতে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মেশানো হয়।

মেহেদি ব্যবহারের পর কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে মনের মতো রং পাওয়া সম্ভব। ভালো রং পেতে মেহেদি তোলার পর কমপক্ষে ৩-৪ ঘণ্টা পানি থেকে দূরে থাকুন। এতে রং আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠে। অনেকে মেহেদি ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে থাকেন, যা একেবারেই উচিত নয়। কারণ সাবানের ক্ষারীয় উপাদান মেহেদির রং ফিকে করে ফেলে।

অনেকে মেহেদি শুকাতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করেন, যা ডিজাইন নষ্ট করে ফেলতে পারে। মেহেদি প্রাকৃতিকভাবেই শুকাতে দেওয়া ভালো। মনে রাখবেন, যত বেশি সময় মেহেদি হাতে রাখবেন এর রং তত গাঢ় হবে। মেহেদি যত তাড়াতাড়ি শুকাবে, রং তত তাড়াতাড়ি বসবে এমন ধারণা করা ভুল।

মেহেদি শুকাতে শুরু করলে চিনি, লেবুর পানি হাতে স্প্রে করতে পারেন। এতে মেহেদি ভালোভাবে বসবে এবং রং গাঢ় হবে। মেহেদি উঠানোর পর হাতে সরিষার তেলও মাখতে পারেন।

আরও পড়ুন
ঈদের আগে হাত–পায়ের সজীবতা ফেরাতে যা করবেন
চুল সোজা করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিডনি
অনেকে মেহেদির গাঢ় রং পেতে মেহেদি তেল ব্যবহার করেন। এটি মেহেদি লাগানোর আগে হাতে মেখে নিতে হয়। এই তেল কেনার আগে মেয়াদ এবং উপাদান দেখে নেওয়া উচিত।

পুরোপুরি প্রাকৃতিক বা অর্গানিক মেহেদির বাইরেও আজকাল বিভিন্ন ভালো মানের মেহেদি পাওয়া যাচ্ছে। একটি অর্গানিক মেহেদি কিনতে যেখানে ১০০-১৫০ টাকা খরচ হয়, সেখানে এগুলো পাওয়া যায় মাত্র ৪০-৫০ টাকার মধ্যেই। বিভিন্ন অনলাইন পেজে নিজ হাতে তৈরি অর্গানিক মেহেদি বিক্রি করছেন কেউ কেউ। এগুলো দামে একটু বেশি হলেও মানের দিকে বেশ ভালো।

সর্বশেষ নিউজ