১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

স্বপ্ন না। দেখলাম আমি একটি সিটের নিচে। ঠোঁট ফেঁটে রক্ত পড়ছে

সবুজ মাহমুদ

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ .রাত সাড়ে দশটায় কক্সবাজার হোটেল সি প্যালেসের সামনের শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের কাউন্টার থেকে ঢাকা মেট্রো ব ১৪-৬৮৫১ বাসে উঠি।

বাসটি শহরের কয়েকটি কাউন্টার ঘুরে কক্সবাজার থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্য ছাড়ে রাত ১১:১৫ তে।

আমি ও আমার টিমের অন্যরা খুব ক্লান্ত ছিল। তাই বাসে ওঠার পরপরই ঘুমিয়ে পড়ে। আমি কিছুক্ষণ মোবাইল স্ক্রল করে ঘুমিয়ে পড়ি।

বাসে সিট হেলিয়ে বসতে আমার অস্বস্তি লাগে। আমার বরাবর সামনের সিটে ৬ মাসের এক শিশু কোলে মা বসেছে। আমার পিছনের ছিটেও ১/দেড় বছরের শিশু কোলে এক মা বসেছে। আমি সিট না হেলিয়ে সোজা রেখে ঘুমি পড়ি। আমার সামনে পিছনে যারা বসেছে তারা সবাই একই পরিবারের পুরো বাসে এই পরিবারের প্রায় ১০ জন। তার মধ্যে শিশুই ৪টা।

ঘুমোনোর আগে দেখেছি বাসে লোকাল যাত্রী তোলা হচ্ছে বিভিন্ন স্টপেজ থেকে। শ্যামলী বাসের এমন আচরণ আগে দেখি নাই। বাসে উঠার সময় ড্রাইভারকে আমার টিমের একজন জিজ্ঞেস করে তার বাড়ি কোথায় সে বলেছে তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ খানপুরে।

নিজ জেলার মানুষ তাই যাত্রী উঠনোতে প্রতিবাদ করিনি। আমি ঘুমোনোর আগে বাসে গান চলছিল।

ড্রাইভার-হেল্পার আর সুপারভাইজার একসাথে গল্প করতে করতে গাড়ি চালাচ্ছিলো।

ভাবলাম স্বপ্ন দেখছি। কারণ শিশুর চিৎকার শুনছি। ঘুমোনোর আগে আমি শিশুটির সাথে ইশারায় কথা বললে শিশুটি খিলখিল করে হেসেছিলো।

না! স্বপ্ন না। দেখলাম আমি একটি সিটের নিচে। ঠোঁট ফেঁটে রক্ত পড়ছে। বাসের সবাই হাউমাউ চিৎকার।

উঠে তাকিয়ে দেখি রোড ডিভাইডার দিয়ে বাস ডিভাইড হয়ে গেছে। ড্রাইভার ঘুমাচ্ছিলো।

চট্টগ্রাম শহরের খুলশী এলাকায় রাত সাড়ে ৩টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ যাত্রায় বেঁচে যাই। একেবারে সামনের সিটে যে দু’জন বসেছিল তারা দু’জন মারাত্মক আহত হয়। বাকিদের তেমন কিছু হয়নি। আমার সামনে সিট হেলানো ছিল বলে আমার ঠোঁটে, পায়ে ব্যাথা পাই। ভাগ্যিস চোখে চশমাটা ছিল না। চশমা থাকলে ভেঙে অবস্থা আরো খারাপ হতো।

এ যাত্রায় সত্যি বেঁচে গেছি! আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া।

সর্বশেষ নিউজ