পুলিশের নিপীড়নের মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তাল রয়েছে। এরই মধ্যে এবার সমাবর্তন বর্জন করলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ডজন শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিকে সমাবর্তনে বক্তা করায় শিক্ষার্থীরা ওই অনুষ্ঠান বর্জন করেন।
ওই বক্তা এর আগে শিক্ষার্থীদের চলমান বিক্ষোভ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন পোস্টে দেখা গেছে, ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্বববিদ্যালয়ের (ভিসিইউ) শিক্ষার্থীরা গাউন ও টুপি পরা অবস্থায় সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কক্ষ থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান দলের গভর্নর গ্লেন ইয়ংকিন তখন সমাবর্তন অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
বস্তুত, ইয়ংকিনকে সমাবর্তনের বক্তা করার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। কারণ তিনি গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ডাকা প্রতিবাদ কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন।
এ ছাড়া ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যখন বর্ণবাদ বিষয়ক একটি পাঠ্যক্রম চালু করার কথা ভাবছিল, তখন সেটির বিরোধিতা করার কারণেও ইয়ংকিন সমালোচিত হয়েছিলেন।
অনলাইনে পোস্ট করা ভিডিওতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদেরকে স্লোগান দিতে দেখা গেছে, যেখানে তারা বলছেন যে, প্রকাশ কর, সরে যাও। আমরা থামব না, আমরা বিশ্রাম নেব না।
ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন বর্জন করেছেন, তাদের একজন হচ্ছেন শিরিন হাদাদ।
শনিবার তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, সমাবর্তনের স্বাগত বক্তব্য শুরু করার পর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা এত জোরে তালি বাজাতে শুরু করেন যে, অন্যরা ইয়ংকিনের কোনো কথাই শুনতে পাচ্ছিলেন না।
এরপর অন্তত ১৫০ জন শিক্ষার্থী একসঙ্গে সমাবর্তন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান বলেও জানান মিজ হাদাদ।
তাতে অবশ্য ইয়ংকিন তার স্বাগত বক্তব্য থামাননি। অনুষ্ঠান শেষে তিনি সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টও দিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীরা যেভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন, সে বিষয়ে তাকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়নি।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির হিসাবে, এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৫৭টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে প্রায় ২ হাজার ৯০০ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও ইসরাইলকে সহায়তা বন্ধের দাবিতে গত ১৭ এপ্রিল ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে দেশটির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে।