আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ছয় জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজের শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম ছাত্রাবাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। হলে থাকা আবাসিক শিক্ষার্থীদের শুক্রবার রাত ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী সরকারি কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাসে নোয়াখালী কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও একলাশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি অনুসারীদের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নোয়াখালী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নাঈম তানিম ও একলাশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক সানিসহ প্রায় ছয় নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে নোয়াখালী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নাঈম তানিম বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় কলেজের শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম ছাত্রাবাসের হলরুমে আমাদের কলেজ শাখা ছাত্রলীগের পূর্বনির্ধারিত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভার্চুয়ালি অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। আমরা অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি ও ছাত্রাবাস কর্তৃপক্ষের অনুমতিও নিয়েছি। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম রাতুল ও একলাশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক সানির নেতৃত্বে শতাধিক বহিরাগত যুবক এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে আমার হাত ভেঙ্গে যায়। আমরা বিষয়টি তাৎক্ষণিক কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। পরে কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে আমাদের মতবিনিময় সভা স্থগিত করা হয়।’
জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম রাতুল বলেন, শুক্রবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মাইজদীতে একটি কর্মসূচি ছিল। অন্যদিকে রাত ৮টায় কলেজ ছাত্রলীগের মতবিনিময় সভা হওয়ার কথা ছিল। বিকালে কলেজ ছাত্রাবাস থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে বের হতে না পারে সেজন্য কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ছাত্রাবাসের প্রধান ফটকে তালা দেয়। খবর পেয়ে আমাদের জুনিয়র ব্যাচ সেখানে গেলে তাদের উপর হামলা করে। হামলায় একলাশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক সানিসহ পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি।
নোয়াখালী সরকারি কলেজের শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম ছাত্রাবাসের হোস্টেল সুপার ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় শুক্রবার রাত ৯টায় মধ্যে সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ত্যাগ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নোয়াখালী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোর্তাহিন বিল্লাহ বলেন, ঘটনা জানামাত্রই পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
(এইদিনএইসময়/জাকারিয়া শুভ)