২ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তির ঐক্যের বিকল্প নেই: রাষ্ট্রপতি

ডেক্স রিপোর্ট
spot_img
spot_img

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের বিকল্প নেই। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সবাইকে কাজ করতে হবে।

শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৮ম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপ্রধান এ কথা বলেন।

তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রেখে উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এবং সর্বস্তরে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে ৭১ এর পরাজিত শক্তি ঘাতক-দালালদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও বলেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন বলেন, এ লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের বিকল্প নেই। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ উপেক্ষা করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সবাইকে কাজ করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর দর্শন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বোধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ারও তাগিদ দেন।

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ডিজিটাল মাধ্যম ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করুন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ুন, বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে জানুন। মনন, বোধ ও জীবনাচরণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বুকে লালন করে বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরুন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ২১ বছর পর ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে শুরু হয়ে এ আন্দোলনের প্রাজ্ঞ নেতারা প্রায় ৩৩ বছর ধরে নানা চড়াই-উতরাই, ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে এ সংগঠনকে আজকের জায়গায় নিয়ে এসেছেন।

রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, কেবল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারই নয়, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এ মহাসংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস পৌঁছে দিয়ে তাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে দীক্ষিত করার ক্ষেত্রেও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তিনি আশা করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সহনশীল ও মানবিক সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আগামী দিনগুলোতেও ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও ঘাতক-দালাল চক্র মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাসহ আমাদের সাফল্য ম্লান করে দিতে অবিরাম অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ সম্পন্ন হলেও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কাজ কখনো শেষ হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভূমিকা অতীতের মতো ভবিষ্যতে উজ্জ্বলভাবে কার্যকর থাকবে।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও প্রশংসা অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক ও তথ্য-প্রযুক্তির নানা সূচকে বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি আমরা। এ অগ্রযাত্রার পথে সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল মৌলবাদ ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ। প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্ব এবং জঙ্গিবাদের প্রতি তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কারণেই জঙ্গিবাদ দমনে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও ডিজিটাল বিপ্লবের পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি ধর্মীয় ও ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ নিউজ