ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) গাইনি বিভাগ থেকে একদিন বয়সী এক কন্যা নবজাতক চুরির ঘটনার ২০ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি। তবে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে নবজাতকের চোর, তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি নবজাতক।
ঢামেক হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া যমজ কন্যা নবজাতকের একটি চুরির ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন নবজাতকের বাবা শরিফুল ইসলাম।
বুধবার (৫জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহ আলম।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকেই আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং এটি নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা ওই ওয়ার্ডের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি এবং সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এক নাতনী হারিয়ে অপর নাতনিকে জরিয়ে কাঁদছেন দাদি
মঙ্গলবার (৪জুন) দুপরের দিকে নবজাতক চুরির ঘটনাটি ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবজাতকের বাবা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার দেশের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার আদাবাড়ি গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার ধামরাই উপজেলার কালামপুরে ভাড়া থাকি। সোমবার (৩জুন) রাতে আমার স্ত্রী সুখী আক্তারের প্রসব বেদনা হলে ঢাকা মেডিকেলের ২১২ নম্বর লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি করাই। সেখানে গতকাল মঙ্গলবার (৪জুন) সকালে সিজারিয়ান অপারেশনে দুটি জমজ কন্যা সন্তান জন্ম দেয় আমার স্ত্রী সুখী আক্তার। একটি শিশুর ওজন ১ কেজি ৬০০ গ্রাম ও আরেকটির ওজন ১ কেজি ৫০০ গ্রাম ছিল। জন্মের পর নবজাতক দুটি তদের দাদি ও বাবার কোলে ছিল।
সন্তান হারিয়ে দিশেহারা অসহায় পিতা
তিনি আরও জানান, মেজবাগ (৮) নামে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।বড় ছেলে মেজবাগের জ্বর এলে পাশে থাকা এক মহিলা বলেন আমার কাছে বাচ্চাটি দিয়ে আপনি বড় বাচ্চার জন্য ওষুধ নিয়ে আসেন। পরে আমি এক পাতা নাপা নিয়ে আবার ওয়ার্ডে ফিরে আসি। আমার মাকে জিজ্ঞেস করি বাচ্চা কোথায়। পরে দেখি যে নারীর কাছে আমি বাচ্চা দিয়েছিলাম সেই নারী আর নাই। পরে বিষয়টি আমরা আনসার সদস্যদের এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে যাচাই-বাছাই শুরু করেন । এরপর আমি শাহবাগ থানায় গিয়ে একটি মামলা দায়ের করি।’
তিনি আরও বলেন, ’”আমি একজন সাধারণ মানুষ, লেবারের (শ্রমিক) কাজ করি, আমার সাথে কেন এমন হলো, আমি আমার বাচ্চাকে ফিরে পেতে চাই। এখন পর্যন্ত আমার নবজাত কন্যা শিশুটি উদ্ধার হয়নি”, এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এর
বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
(নিজস্ব প্রতিবেদক/এইদিন এইসময়)