২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
--বিজ্ঞাপন-- Bangla Cars

কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের জলসাকে ঘিরে সংঘর্ষে দু’জন নিহতের ঘটনায় থমথমে পঞ্চগড় 

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
spot_img

দাবদাহের মতো পুড়ছে পঞ্চগড়। শনিবার সকাল থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সামনে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। আগের দিনের সংঘর্ষ ও হামলার কারণে এখনো জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি’র গাড়ি সারাদিন শহরে টহল দিয়েছে।

এর আগে শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকেই শহরের রাজপথগুলো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহমদিয়া জামাত বা কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের ‘সালানা জলসা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। রাত আটটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়েন।

এ ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া পুলিশসহ অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আহমদিয়াদের জলসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার দাবি করেছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলিতে নিহত আরিফ হোসেন শিবির কর্মী ছিলেন। অন্যদিকে, ঐ রাতে কাদিয়ানি পল্লী থেকে জাহিদ হাসান নামে অপর এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি নাটোরের বনপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন।

ঘটনার দিন শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে কোথাও উত্তেজিত মুসল্লিদের জটলা তো কোথাও মিছিল নজরে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ছাড়াও টায়ার ও অন্যান্য দাহ্য পদার্থে অগ্নিসংযোগ করতেও দেখা যায়। একজনের মাথা ফেটে গড়িয়ে পড়া রক্ত যেমন আরেকজনকে মুছে দিতে দেখা গেছে, তেমনি পুলিশের সতর্ক অবস্থানও দৃশ্যমান ছিলো।

উল্লেখ্য, পঞ্চগড় শহরের উপকণ্ঠে আহম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়া জামাত তিন দিনব্যাপী ‘সালানা জলসা’র আয়োজন করে। এই জলসা বন্ধের দাবিতে জুমার নামাজের পর শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে করতোয়া সেতুর দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পড়েন।

কিছুক্ষণ পর চৌরঙ্গী মোড়সংলগ্ন সিনেমা হল সড়ক থেকে একদল বিক্ষোভকারী মিছিল নিয়ে এসে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। তখন পুলিশ ধাওয়া দিলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। একদল বিক্ষোভকারী আহম্মদনগর এলাকায় গিয়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অন্তত ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় এ পাল্টাপাল্টি হামলা চলে।

স্থানীয়রা, বিশেষত কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাদের প্রাণ ও সম্পদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সর্বশেষ নিউজ