২০ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক নির্যাতনে শিক্ষার্থী অজ্ঞান

রাজশাহী প্রতিনিধি
spot_img
spot_img

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তারকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতি বালা ও সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুন্নাহার দোলনের বিরুদ্ধে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি পানি গরমের হাঁড়ি নিয়ে সুমাইয়ার সাথে দোলনের কথা কাটাকাটি হয়। এতে দোলন ক্ষিপ্ত হয়ে সুমাইয়ার ‘বেয়াদবি’র অজুহাতে তাঁর সিট বাতিল করে গণরুমে দেওয়ার জন্য হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদনপত্র দেন। এতে তিনি ব্লকের ছাত্রীদের স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রাধ্যক্ষ সুমাইয়াকে গণরুমে স্থানান্তর করেন।

তবে হল প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ব্লকের শিক্ষার্থীরা হল প্রাধ্যক্ষের কাছে সুমাইয়ার পক্ষ নিয়ে আরেকটি চিঠি দেন। এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার সুমাইয়াকে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেত্রী স্মৃতি বালা ও দোলন। এ সময় হল প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্রলীগ নেত্রী ওই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার জন্য সুমাইয়াকে চাপ দেন। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগ নেত্রী ও দোলন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে মানসিক নির্যাতন করেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর, মানসিক নির্যাতন ও ধর্ষণের হুমকির ঘটনায় সহপাঠীরা মানববন্ধন করেছেন। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। দ্রুত অভিযোগ তদন্ত করে বিচারের দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ইনস্টিটিউটের ‘অভিযোগ তদন্ত কমিটির’ আহ্বায়ক অধ্যাপক আকতার বানুর কাছে অভিযোগ জমা দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাতে প্রক্টর দপ্তরে ২ মার্চ একই অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় অভিযোগ জমা দেওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অধ্যাপক আকতার বানু ডেকেছিলেন ভুক্তভোগী ছাত্রীকে। সেখানে তাঁর অভিযোগের বিষয়ে জবানবন্দি নেওয়া হয়। অভিযোগ দেওয়া আরেক ছাত্রকে আজ বিকেলে ডাকা হয়েছে।

এর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি আইইআরের দ্বিতীয় ব্যাচের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে এক ছাত্রীকে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী আইইআরের পঞ্চম ব্যাচের ছাত্রী।

তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, নির্যাতনের ঘটনায় নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিফা হক ওরফে শেফা ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান। তাঁরা একই ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী। আর মারধরসহ নির্যাতনের বিষয়ে আরেকটি অভিযোগ তুলেছেন ইনস্টিটিউটের তৃতীয় ব্যাচের আরেক ছাত্র। তাঁর সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটে ২৫ ফেব্রুয়ারি।

অভিযোগ তদন্ত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক আকতার বানু আজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। এই ঘটনায় অভিযোগ আনা একাধিক শিক্ষার্থী ও সাক্ষীদেরও ডাকা হবে। এতে সময় লাগতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, তিনি দুই শিক্ষার্থীর দুটি পৃথক অভিযোগ পেয়েছেন। এই বিষয়ে বিভাগে তদন্ত হচ্ছে।

সর্বশেষ নিউজ