কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল আজ রবিবার বেলা আড়াইটার পরে বঙ্গভবনে গেছেন। এরপর বেলা ৩টার পর রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের হাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বরাবর স্মারকলিপি দেন। পরে প্রতিনিধিদলটি গুলিস্তানে যান।
বঙ্গভবনে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন, নাহিদ ইসলাম, আ: কাদের, আসিফ মাহমুদ, মো. মাহিন সরকার, হাসিব আল ইসলাম, সারজিস, মেহেরুন নেসা, সুমাইয়া, আসিফ, রিফাত, আরিফ হোসেন ও মাসুদ।
এদিকে আন্দোলনরত অন্য শিক্ষার্থীরা রাজধানীর গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে অবস্থান করছেন। সেখানে অনেক পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। আন্দোলনকারীরা বক্তব্য ও স্লোগান দিচ্ছেন।
আজ দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলনকারীদের গণপদযাত্রা শুরু হয়। বঙ্গভবনে যাওয়ার পথে বার বার পুলিশের বাধার মুখে পড়েন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা অধিকার চত্বর, জিরো পয়েন্ট, জিপিওর সামনে পুলিশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে শিক্ষার্থীদের। পুলিশের সঙ্গে তাদের বাদানুবাদ হয়।
গণপদযাত্রার জন্য বেলা ১১টার আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে বড় কিছু মিছিলও আসে।
গণপদযাত্রার উদ্দেশ্যে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর মিছিল শুরু হয় দুপুর ১২টা ২ মিনিটে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শাহবাগ, মৎস্য ভবন হয়ে শিক্ষা অধিকার চত্বরে গিয়ে পুলিশি ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। তারা ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়-সংলগ্ন সড়কে ঢুকে পড়ে।
বেলা ১টা ১০ মিনিটে সচিবালয়ের সামনের সড়কে (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে) পুলিশের কয়েকজন সদস্য কথা বলতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের বাদানুবাদ হয়। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের নেতারা মাইকে কাউকে বিশৃঙ্খলা না করার অনুরোধ করেন।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় বসে পড়তেও বলা হয়। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ বেলা ১টা ১৮ মিনিটে জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয়। অন্য অংশটি তখনো পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিল।
এ সময় মাইকে আবার শিক্ষার্থীদের রাস্তায় বসে পড়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা জায়গা নিয়ে বসে পড়ি। এখানে কিছুক্ষণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।’ কিছু শিক্ষার্থী সড়কে বসেও পড়েন।
তখনো পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিলেন আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আবদুল্লাহসহ কয়েকজন। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই রাস্তায় বসে পড়া শিক্ষার্থীরা আবার উঠে যান। বেলা ১টা ২৫ মিনিটে তারা জিরো পয়েন্ট মোড়ের সড়ক অবরোধ করেন।
জিরো পয়েন্টে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ওই সময় বলেন, এখানে আমরা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করব। আমাদের প্রতিনিধিরা স্মারকলিপি দিয়ে বঙ্গভবন থেকে ফেরার আগপর্যন্ত আমরা জিরো পয়েন্টের সড়ক অবরোধ করব। অবরোধে শিক্ষার্থী-প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেবেন।
বেলা ১টা ৪০ মিনিটে জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান ও বক্তব্য দেন। তাদের অবরোধে সংশ্লিষ্ট সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজট তৈরি হয়।
বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত জিপিওর সামনে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ব্যারিকেড খুলে দিলে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে আরও অগ্রসর হন। বেলা ১টা ৫০ মিনিটে তারা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
টিআই