প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেই তালিকায় রয়েছেন দেশের সেরা দুই ক্রিকেট তারকা মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এবং সাকিব আল হাসানও। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরই মাশরাফীর বাড়ি পুড়িয়ে এবং সাকিবের একটি রাজনৈতিক অফিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালে ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছিলেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে চলতি বছর আবারও নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য। একইভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন সাকিব আল হাসানও। ক্রিকেটে থাকাকালে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ায় অনেক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন এই দুই ক্রিকেটার।
যার মাশুল গুনতে হচ্ছে এখনও। তাই গতকাল (রোববার) রাজনীতি এবং ক্রিকেট এক সঙ্গে না চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। এবার সোহানের সুরে সুর মিলিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। সেই সঙ্গে রানিং ক্রিকেটারদের যেনও দলে না ডাকে রাজনৈতিক দলগুলোকে এই পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১২ আগস্ট) মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে লিপু বলেন, যে সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে, তা এগিয়ে যাবে। কেউ জাতীয় দলে থাকা অবস্থায় রাজনীতি করতে পারবেন কি না সেটি নিয়ে ভাবতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো যে সংস্কার নিয়ে কথা বলছে, সেখানে একটি রাজনৈতিক দলেরও উচিত কোনো রানিং খেলোয়াড়কে তাদের দলে না নেওয়া।
‘রাজনৈতিক দলগুলো দেশের জন্যই তো কাজ করে। আমার মনে হয় খেলা চালানোর সময়টাতে রাজনীতিতে আসা উচিত নয়। ভবিষ্যতের জন্য আমি আমার মতামত দিয়ে রাখলাম।’
রাজনীতি করার অধিকার সকল নাগরিকের আছে। তবে পুরো বছর ধরে ব্যস্ত সময় পার করা ক্রিকেটারদের জন্য রাজনীতিতে নাম লেখানো অতোটা সহজ নয়। যার দৃষ্টান্ত প্রমাণ সাকিব আল হাসান। রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে ক্রিকেটে ঠিকঠাক সময় দিতে পারেননি, যার ফলে পারফরম্যান্সও ছিল হতাশাজনক।
তাই এই প্রধান নির্বাচক মনে করেন, বিসিবিও কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত। যেখানে ক্রিকেটাররা একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইনে চলবে। লিপু বলেন, কেউ যদি রাজনীতি করতে চায়, ক্রিকেট বোর্ডের উচিত হবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা। এখানে আসলে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন আসা উচিত ‘
‘সেই গাইডলাইনে থাকবে যদি খেলা থাকে, আবার রাজনীতির কর্মকাণ্ডও থাকে, তাহলে ক্রিকেটাররা কোনটাতে গুরুত্ব দেবেন? সেই কারণে আমার মনে হয়, বোর্ডের যদি সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা থাকে, সেটি হলে খেলোয়াড়রা চিন্তা করতে পারবে, রাজনীতিতে যাওয়ার আগে তাদের কী করতে হবে।’
ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে প্রবেশ বন্ধ করা নিয়ে তিনি বলেন, এই রাস্তাটা মনে হয় বন্ধ হওয়া উচিত। খেলোয়াড়রা দেশের সম্পদ, তাদের পেছনে বিনিয়োগ থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। খেলোয়াড় হিসেবে আপনার দেশকে সার্ভিস দেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু রাজনীতিতে ঢোকার মাধ্যমে দেশ বঞ্চিত হয়। যারা আগে থেকেই রাজনীতির সাথে যুক্ত, তাদের কথা ভিন্ন।’
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবিদরাও দেশের জন্যই করেন। কিন্তু ক্রিকেটারদের নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের নতুন করে বিষয়টি ভাবা উচিত। একজন খেলোয়াড়কে তার প্রায়োরিটি সেট করা উচিত।