মিজানুর রহমানঃশতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন সিগারেট কোম্পানি গুলো বাঁচিয়ে রক্ষার স্বার্থে, তামাক আইনের নিম্নস্তর কোটা দেশী সিগারেট কোম্পানির জন্য সংরক্ষণ দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন লালমনিরহাট জেলার অবহেলিত তামাক চাষীরা।মানববন্ধনে শতভাগ দেশীয় তামাক শিল্প রক্ষায় দ্রুত স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়নের দাবি করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) লালমনিরহাট মিশন মোড়ে সকাল সাড়ে ১০টায় অবহেলিত তামাক চাষীদের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,ৎলালমনিরহাট জেলার মাটি এবং আবহাওয়া তামাক চাষের উপযোগী।ন্যায্য মূল্যে তামাক বিক্রি না করতে পারায় জেলার চাষীরা তামাক চাষ করে লাভবান হতে পারছেনা।দেশীয় কোম্পানিগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারলে তামাকের শতভাগ ন্যায্য মূল্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এতে জেলায় নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ বাড়বে, যা দেশের বেকার সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখবে।
সমাবেশ থেকে দেশের প্রায় ৩০টি কোম্পানির সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী তামাক চাষীদের রুটি রুজি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী,অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কতূপক্ষ হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়।
সমাবেশে বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানিতে কর্মরত কর্মচারী ও তামাক চাষীরা অভিযোগ করেন, শুধু নীতি সহায়তা না থাকার কারণে শতভাগ দেশীয় সিগারেট কোম্পানির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে।দেশের অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের আদি ব্যবসা তামাক। বর্তমানে দেশের ৩০টি কোম্পানিতে কর্মরত ও তামাক চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লাখ লাখ শ্রমিকদের রুটি-রুজি আজ হুমকির মুখে।
তারা বলেন, বিদেশী প্রতিষ্ঠান গুলো সরকারের তামাক নীতিমালার সুযোগ নিয়ে সিগারট শিল্পকে নিয়ন্ত্রন করছে, এতে দেশীয় সিগারেট কোম্পানীগুলো প্রতিযোগীতায় টিকতে না পারায় অনেক সিগারেট কোম্পানি তাদের ব্যাবসা হারিয়েছে।বাজার থেকে দেশীয় কোম্পানি গুলো সরে যেতেই বিদেশী কোম্পানী গুলো ভোক্তা পর্যায়ে সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করে একচেটিয়া ব্যাবসা করে অর্থ লুটে নিচ্ছে,এতে দেশের অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে দেশের শিল্প ধ্বংশ হচ্ছে, কর্মসংস্থান হারাচ্ছে মানুষ।তাই সরকার কে দেশীয় শিল্প বিকাশে বিদেশী সিগারেট কোম্পানীর জন্য আলাদা নীতিমালা প্রনয়ন করতে হবে, সেই সাথে দেশীয় তামাক শিল্প বিকাশে তামাক নীতিমালর নিম্নস্থরের সুবিধা সংরক্ষিত করার দাবী জানান তারা। দেশীয় তামাক শিল্প রক্ষা করতে এখনই প্রতিযোগিতা আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে,অন্যথায় বিদেশী কোম্পানি নির্ভর হয়ে পড়বে দেশীয় সিগারেট বাজার।
মানববন্ধন কর্মসূচির ফেস্টুন ব্যানারে বিভিন্ন স্লোগান ও দাবী নিয়ে উপস্থিত হন চাষীরা ‘দেশীয় তামাক শিল্প রক্ষায় এখনই প্রতিযোগিতা আইনের সঠিক বাস্তবায়ন চান,নিম্ন স্ল্যাবের সিগারেট উৎপাদনে বিদেশী কোম্পানিকে নিরুৎসাহিত করতে হবে’, ‘দেশের টাকা দেশে রাখুন- শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন তামাক শিল্প রক্ষা করুন’,‘ বিদেশী কোম্পানির মনোপলি ব্যবসা বন্ধ করুন- শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন তামাক শিল্প রক্ষা করুন’, ‘তামাক শিল্পের বাজেট কি শুধুই বিদেশীদের সুবিধার্থে?’,’শতভাগ দেশীয় তামাক শিল্প- সরকার না বিদেশী কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে?।
সরকার শতভাগ দেশীয় কোম্পানির বিনিয়োগ সুরক্ষায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে দুটি মূল্য স্তর সৃষ্টি করে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশীয় কোম্পানির জন্য নিম্ন স্তর সংরক্ষিত রেখে বহুজাতিক কোম্পানির আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডকে মধ্যম ও উচ্চমান স্থরে উন্নীত করে।
তারা আরও বলেন, বহুজাতিক কোম্পানির দখলে এখন ৯০ ভাগ সিগারেটের বাজার। সেখানে দেশীয় কোম্পানীর জন্য গৃহীত পদক্ষেপ অজানা কারণেই বাস্তবায়ন না হওয়ায় শতভাগ দেশীয় তামাক শিল্পকে কৌশলে হত্যা করা হচ্ছে। পাশাপাশি নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বাড়ায় নকল সিগারেটের দাম বাড়ছে, সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
তামাক শিল্পে অবিলম্বে ৪০ শতাংশ মনোপলি আইন কার্যকর করা, একচেটিয়া বিদেশি তামাকের বাজার হটিয়ে দেশি তামাক শিল্পে প্রতিযোগিতামূলক আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান দেশীয় তামাক চাষিরা।