২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার
--বিজ্ঞাপন-- Bangla Cars

কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে  ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ বন্ধ 

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
spot_img

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে ফসলরক্ষা ও বন্যানিয়ন্ত্রণ একটি বাঁধের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ওই বাঁধের আওতায় উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের মান্দুরিয়া, পিটুয়া, চাটিগাঁও, বিয়ারবন্দ, ডগড়াসহ অন্তত সাতটি হাওরের প্রায় দেড় হাজার একর জমির ফসল নির্ভর করে। অকাল বন্যা হলে এসব খেতের ধান তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কলমাকান্দা উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে আমবাড়ি বাজার থেকে হীরাকান্দা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে জাপান উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে ‘দশধার রানীগাঁও পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি’র উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়। কাজে তদারকি করে এলজিইডি। কিন্তু মাটি কাটার কাজ শুরু হলে সমিতির কমিটির মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এ কারণে দাতা সংস্থা জাইকা অর্থ ছাড় বন্ধ করে দেয়। এতে করে বাঁধটিতে হালকা মাটি কাটা হলেও আর ব্লকের কাজ করা হয়নি। গত বছরের বন্যায় মাটির ওই বাঁধটিতে দুইটি বড় গর্ত সৃষ্টি হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁধের পাঠানপাড়া এলাকায় কবির মেম্বার ও মতিউর রহমানের বাড়ির সামনে দুটি গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বাঁধটির বিভিন্ন স্থানে স্থানে ভেঙে গেছে।

পাঠানপাড়া গ্রামের কৃষক বজলুর রহমান বলেন, জরুরি ভিত্তিতে বাঁধের দুটি গর্ত সংস্কার না করা হলে যদি আগাম বন্যা হয় তবে পোগলা ইউনিয়নসহ বারহাট্টার রায়পুর ও বাউসি ইউনিয়নের অনেক এলাকার বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

একই এলাকার কৃষক রহমান মিয়া বলেন, ধারদেনা করে মান্দুরিয়া হাওরে ছয় একর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। কিন্তু বাঁধটি সংস্কার না করায় ফসল নিয়ে আতঙ্কে আছি।

এ ব্যাপারে এলজিইডি কলমাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী শুভ্রদেব চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দশধার রানীগাঁও পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। একারণে জাইকা অর্থ প্রদান না করায় এখানো বাঁধের কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না।

সমিতির সভাপতি ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, সমিতির এডহক কমিটি গঠনের পর থেকেই আমরা সাবেক কমিটির সভাপতি নোয়াব আলী ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল নন্দীকে সমিতির কাগজপত্রসহ দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাগিদ দেই। কিন্তু তাঁরা এখনো দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। এ জন্যে নতুন কমিটিও গঠন করা যাচ্ছেনা।

সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল নন্দী বলেন, জেলা সমবায় কর্মকর্তা বিধিবর্হিভূতভাবে আমাদের সমিতি থেকে আমাকেসহ ১০ জন সদস্যকে বহিষ্কার করেছেন। পরে সরকারি কর্মকর্তা দিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি এডহক কমিটি গঠন করেন। তাই আমরা নিরুপায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আইনে যা হয় তাই আমরা মেনে নেব।

জেলা সমবায় কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র পাল বলেন, আমরা অফিসিয়াল চিঠি দিয়ে পরে সরকারি কর্মকর্তা দিয়ে এডহক কমিটি করেছি। আগের যে কমিটি ছিল তার মেয়াদ উর্ত্তীণ হওয়ার আগেই তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে তারা বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করলে সেখানেও রায় তাদের পক্ষে যায়নি। পরে তারা আদালতে যায়।

সর্বশেষ নিউজ