চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ৭নং মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমান।
কাজী মিজানুর রহমান সংবাদ সারাবেলা’র সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এবং মোহনপুর পর্যটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান।
রিটার্নিং কর্মকর্তার তোফায়েল আহমেদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমান (অটোরিকশা) পেয়েছেন ৫ হাজার ২২ ভোট। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল হাই প্রধান (নৌকা) পেয়েছেন ১ হাজার ৮০৮ ভোট। ১ হাজার ২২১ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন আবুল কাসেম (আনারস)।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নয়জন প্রার্থীর মধ্যে আরও ছিলেন- ফয়সাল আহমেদ (টেলিফোন), শরীফ মাহমুদ সায়েম (টেবিল ফ্যান), আবু হানিফ অভি (ঢোল), বদিউল আলম (চশমা), হাবিবুর রহমান (মোটর সাইকেল) এবং সেলিম মিয়া (ঘোড়া)। এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১৬ হাজার।
এর আগে গতকাল ১৬ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোটগ্রহণ। ভোটে সরকারি দল মনোনীত প্রার্থীর সাথে মূল প্রতিদ্বতায ছিলেন কাজী মিজানুর রহমান। এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে দিনভর নির্বাচনি এলাকায় টানটান উত্তেজনা, সংঘর্ষ, ভোটারদের বাধা দেয়ার পরও ভোটগ্রহবে কোন বিচ্যুতি ঘটেনি।
তবে ভোট চলাকালে সকালের দিকে একটি কেন্দ্রের বাইরে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কোন বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ করলে প্রার্থীদের অ়ভিযোগ পাল্টা অভিযোগও ছিলো।
বিকাল পৌনে ৪ টায় দশানী মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট প্রদান শেষে ভোটগ্রহণের পর কেন্দ্র ভিত্তিক ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী মিজান।
ষড়যন্ত্র করে ফলাফলে পরিবর্তন করে ফেলার আশংকা প্রকাশ করে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করলেও আইনশৃক্ষলা বাহিনীর তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগেও তিনি বলেন, গত ৫/৬ দিন থেকে নৌকার প্রার্থীসহ অনেকেই ভোটে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের বাইরে কিছু ঝামেলা ছাড়া মানুষ সুন্দরভাবেই ভোট দিয়েছে। ভোটের এমন পরিবেশে আমি সন্তুষ্ট।
আইনশৃক্ষলা বাহিনীর তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করে কাজী মিজান বলেন, ভোটের পরিবেশ ঠিক রাখতে গত কয়েক আইনশৃক্ষলা বাহিনী অনেক তৎপর ছিল। তারা অনেক পরিশ্রম করেছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে।
এদিকে অবাধ, সুষ্টু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাস্তবায়নে যেকোন ধরনের সহিংসতা এড়াতে ইউনিয়নজুড়ে ৩০০ পুলিশের সাথে র্যাবের ৩ টি টিম, ২ প্লাটুন বিজিবি ও চরাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ডের সাথে বিপুল পরিমাণ নৌ-পুলিশ ফোর্স মোতায়েন ছিলো। এছাড়াও ছিলো তিনটি স্ট্রাইকিং টিম,৭ টি মোবাইল টিম। নির্বাচনি এলাকায় বসানো হয ৭টি পুলিশ চেকপোস্ট।
এই মোহনপুর ইউনিয়নটি সাবেক ত্রাণমন্ত্রী ও তিনবারের প্রভাবশালী এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমের ইউনিয়ন হিসেবেও পরিচিত।
উল্লেখ্য, মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২০ বছরের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুল হক চৌধুরী বাবুল গতি বছরের ১০ নভেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যুর পর এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়।