আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই আদালত সাধারণত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ইত্যাদি অপরাধের জন্য দায়ীদের অভিযুক্ত করে থাকে।এবার এই আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে।রাশিয়া ,চীন ও ভারতের মতো যুক্তরাষ্ট্রও স্বীকৃতি দেয়নি এ আদালতকে।
তারপরও রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে সেই আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানাকে স্বাগত জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মূলত ইউক্রেনের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমি পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। খবর আলজাজিরার।
পুতিনের সাথে শিশু অধিকার কমিশনের কর্মকর্তা মারিয়া আলেক্সিয়েভনা লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছে আইসিসি।
ইউক্রেন থেকে শিশুদের জোরপূর্বক নির্বাসিত করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে আইসিসি।
আদালত জানিয়েছেন, এটি বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে যে, অভিযুক্তরা ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে জোরপূর্বক বেআইনিভাবে ইউক্রেনীয় শিশুদের রাশিয়ার ভূখণ্ডে স্থানান্তরের পেছনে দায়দায়িত্ব বহন করছে।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে জো বাইডেন এই বিষয়ে বলেন, “আমি মনে করি এটি (গ্রেফতারি পরোয়ানা) ন্যায়সঙ্গত।”
এ সময় তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদিও এখন পর্যন্ত আইসিসিকে স্বীকৃতি দেয়নি, তারপরও আমি মনে করি সামনের দিনগুলোতে এটা ব্যাপক তাৎপর্য ফেলতে পারবে।
এইদিকে পুতিন যে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তা ইতোমধ্যে ‘পুরোপুরি স্পষ্ট’ বলেও উল্লেখ করেছেন জো বাইডেন ।
ইউক্রেনে রাশিয়া ব্যাপক পরিসরে যুদ্ধাপরাধে জড়িত—জাতিসংঘের তদন্ত দলের এমন অভিযোগের পরপপরই এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এই পরোয়ানা জারির পর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেন, এই অভিযোগের কোন ‘তাৎপর্য’ নেই।
মারিয়া আরও বলেন, আইসিসির রোম সংবিধির সাথে যুক্ত নয় রাশিয়া। তাই এই আদালতের অধীনে চলার কোনও আব্যশকতাও নেই।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকলেও কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা তাদের নেই।
আইসিসি যা করতে পারে তা হলো, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অন্য দেশের সহায়তায় গ্রেফতার করা এবং গ্রেফতারের পরে তাকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে তার কার্যালয়ে বিচারের জন্য হাজির করা।
আইসিসি রোম চুক্তির আওতায় বিচারিক ক্ষমতা শুধু সেসব দেশে প্রয়োগ করতে পারে, যে দেশগুলো এই আদালত গঠন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।
উল্লেখ্য রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এই সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি। তাই পুতিন বা মারিয়া বেলোভাকে এই আদালতের হাতে সমর্পণের কোনও সুযোগ নেই। তাই এই পরিস্থিতিতে,পুতিনকে গ্রেফতার করা অনেকটাই অসম্ভব।সূত্র: আল জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি।
আইসিসির আগের মামলাগুলোর রায় থেকে জানা যায়, শীর্ষস্থানীয় এমন কারও সাজার ঘটনা বিরল। গত দুই দশকেরও বেশি সময়ে, আইসিসি মাত্র পাঁচটি অপরাধের মামলায় শাস্তিসমেত রায় দিয়েছে কিন্তু অপরাধী প্রমাণিতদের কেউ শীর্ষস্থানীয় নন।
তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে , পুতিন কি আসলেই শাস্তি পাবে?