১৪ জানুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার

রোজাকে ঘিরে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লো আরেক দফা, সরকারের হুঁশিয়ারিতেও অনড় বাজার সিন্ডিকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img
spot_img

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৩ বা ২৪ মার্চ শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। রোজায় নিত্যপণ্যের মধ্যে কিছু কিছু পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়।এতে মাসের খরচে বাড়ে বাড়তি চাপ। এর মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি মানুষের উপর যেন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। রমজান মাসে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেও বাস্তবে তার কোন প্রয়োগ নেই । এর আগে থেকেই মূল্যস্ফীতির যাঁতাকলে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। রমজানকে সামনে রেখে ফেব্রুয়ারি মাসে আবারও বেড়ে যায় মূল্যস্ফীতি। হুঁশিয়ারির পরও অটল বাজার সিন্ডিকেট, এমনটাই মনে করছেন সাধারণ মানুষ

বিবিএস তথ্যমতে, দেশে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে  ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন এই ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষুব্ধ সাধারন জনগণ। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায় হুহু করে।

রমজানকে সামনে রেখে ছোলা-বুট, আদা,রসুন, সাদা চিনি ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তবে আটা-ময়দার দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

শনিবার দুপরে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত রমজানে  যেখানে ছোলার মূল্য ছিল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, যা ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । এছাড়া বুটের ডাল ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

অন্যদিকে ইন্ডিয়ান আদা ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা, ১৪০ টাকা কেজির দেশি আদা ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকা, চায়না রশুন ১০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকা, দেশি রসুন ১০/২০ টাকা বেড়ে ১৩০/১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৫ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা, চিনির কেজি ট  ৫ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজিপ্রতি ২০ টাকায় বিক্রি হওয়া পুরাতন আলু এক মাসের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

যদিও ২ কেজি ওজনের আটার প্যাকেট ১৫০ থেকে ১৫ টাকা কমে ১৩৫ টাকা, এক কেজি ওজনের আটা ৭৫ টাকা থেকে ৭ টাকা কমে ৬৮ টাকা, ২ কেজি ওজনের ময়দা ১৭১ টাকা থেকে ১৫ টাকা কমে ১৫৬ টাকা, ১ কেজি ওজনের ময়দা ৮৫ টাকা থেকে ৭ টাকা কমে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মগবাজার এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের মুলা বুঝ দিয়ে যাচ্ছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। দেশে অনেক পণ্য মজুত রয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক, এমনকি রমজান মাসে নাকি কোনো পণ্যের ঘাটতিও থাকবে না। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে কেউ যেন বাজার পরিস্থিতি অশান্তি সৃষ্টি না করতে পারে সেই পদেক্ষেপ নেওয়া হবে বলা হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি হলে সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটিকে নজরদারিতে রাখবে সরকার। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। তারপরও প্রতিনিয়ত প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।’

কাওছার বলেন, ‘বাজার সিন্ডিকেট রমজানের আগেই প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। রমজানে আর কী বাড়াবে। আমি মনে করি জনগণের ওপর অত্যাচার শুরু হয়েছে।’

গত শুক্রবার অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী সিন্ডিকেটের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন , ‘দেশে রমজানেকে সামনে রেখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এবছর রমজানে দেশে যথেষ্ট পরিমাণের মজুদ রয়েছে। দাম বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই। তার পরও যদি কোনো অসাধু ব্যবসায়ী রমজানে দাম বাড়ায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান  বলেন রমজানে যারা দাম বাড়াবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। মানুষের জন্য বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

 

সর্বশেষ নিউজ