বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলন। সংক্ষেপে এটি কপ নামে পরিচিত, যার পূর্ণরূপ হচ্ছে ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস টু দ্য ইউএন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন ও এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা আলোচনার মাধ্যমে করণীয় নির্ধারণ করে এ সম্মেলনে।
সর্বপ্রথম জার্মানির বার্লিন শহরে ১৯৯৫ সালে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে থেকে প্রায় প্রতি বছর বিশ্বের কোনো না কোনো শহরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে কপের ২৮তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে আয়োজিত কপ-২৯ বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এদিন প্রায় ২০টি দেশের শীর্ষ নেতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানায়।
কপ-২৯ সম্মেলনের স্থানেই বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং তুরস্কের ফার্স্ট লেডির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সাক্ষাতের সময় এরদোয়ান তাকে তুরস্ক সফরের আমন্ত্রণ জানান। এরদোয়ান বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সংস্কারের বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গভীর সংস্কারের পথে তুরস্কের সর্বাত্মক সহযোগিতা রয়েছে।
এসময় অধ্যাপক ইউনূস তুরস্কের রাষ্ট্রপতি ও ফার্স্ট লেডিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
তিনি জুলাই মাসে ছাত্রদের সঙ্গে সংহতি প্রদর্শনের জন্য প্রতিবাদকারী ৫৭ জন বাংলাদেশি নাগরিকের মুক্তির জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মুইজ্জু, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে এবং নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা জানান।
অধ্যাপক ইউনূস দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের শীর্ষ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সার্কের পুনরুজ্জীবনের জন্য আহ্বান জানান। তার পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হিসেব
এছাড়া তিনি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী, ঘানার রাষ্ট্রপতি, বসনিয়া হার্জেগোভিনার প্রধানমন্ত্রী, রুয়ান্ডার রাষ্ট্রপতি, আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী, মন্টেনেগ্রোর রাষ্ট্রপতি, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী, ব্রাজিল ও ইরানের সহ-রাষ্ট্রপতি, ফিফার রাষ্ট্রপতি এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
এবারের কপ-২৮ সম্মেলন ছিল জাতিসংঘের সর্বকালের সর্ববৃহৎ জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে বিশ্বের ১৯৮ দেশ ও অঞ্চলের ৭০ হাজারের বেশি প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী যোগ দিয়েছেন।
১৯৯২ সালের পর থেকে কপের আর কোনো সম্মেলনে এত মানুষ অংশ নেয়নি।
(এএ/ ফারহানা সুমনা