২ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার

পথ দুটো: হাসিনার দেখানো জংলীতন্ত্রের পথ অথবা সভ‍্য ও গনতান্ত্রিক পথ

শাহেদ আলম
spot_img
spot_img

ঘৃনার চাষাবাদ নাকি বনাম ভালবাসা ও জবাবদিহিতার বিস্তার। কোন পথ বেছে নেবেন।

অনুতাপের বিষয় হলো, ফ‍্যাসিস্ট বিতাড়নের সম্মুখযোদ্ধাটিও মনে মনে ফ‍্যাসিস্ট ন‍্যারেটিভ লালন করছেন।অস্থির, ভীতু হয়ে পশুর আচারন করছেন। কিভাবে? ভিন্নমত কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। প্রতিপক্ষকে মাঠছাড়া করতে হবে। শত্রুপক্ষ রাক্ষসের মত শক্তিশালী, তাদেরকে গিলে খেয়ে ফেলতে হবে নইলে তারা আমাদের অভ‍্যুথ্বান গিলে খেবে। তাহলে হাসিনার নীতিতে কি ভুলডা ছিল? হাসিনা তো সেভাবে দেশ চালিয়েছে নাকি? কিভাবে?

জামায়াত ভয়ঙ্কর শত্রু। জামায়াত নারীদের গিলে খাবে। জামায়াত বিএনপি মিলে স্বাধীনতাবিরোধী অসুর শক্তি। জামায়াত জঙ্গীবাদী। বিএনপি জামায়াতের সহযোগী তাই তারা জঙ্গীবাদের দোষর। তো, শত্রুকে কোন ছাড় নয়, কঠোর হস্তে দমন! দমন করতে গিয়ে শিবির ধরো সকাল বিকাল নাস্তা কর! পরিনতি কি হয়েছে? খালি হয়েছে হাজার হাজার মায়ের প্রাণ। তো লাভ হয়েছে কোন?

প্রকৃতির আপন নিয়মেই তারা এখন ইতিহাসের নিকৃষ্টতম খুনি। জানি তারা এটা মনে করে না নিজেদের কে। তারা ভাবে তারা এখনও শক্তিশালী। কিন্তু আমরা জানি গ্রামের মানুষ তাদের কতটা ঘৃনা করে। আমরা জানি জানি শহরের মধ‍্যবৃত্ত তাদের পক্ষে আর কোনদিন রাজপথে নামবে না। ২৪ এর অভ‍্যুথ্বানকে নস‍্যৎ করে তাদের ফিরতে হলে কোটি মানুষকে নিয়ে রাজপথে নামতে হবে। কিনেতু আমরা তো জানি ১২-৪৫ বছরের কিশোর-যুবকরা আগামি ২০-২৫ বছর আওয়ামীলীগকে কোনভাবেই ভোটে জয়ী করবে না। তাই বলছি,

দয়া করে পতিত স্বৈরাচারের ভয় নামিয়ে ফেলুন। হায়েনারা আর ফিরবে না। ফিরতে পারবে না। ২/৪ টি ঝটিকা মিছিল আর একত্রিত হওয়া দেখেই হায়েনা এসেছে বলে প্রতিদিন মানুষকে তটস্থ করে রাখলে ১৫/২০ বার নকল হায়েনার পরে সত‍্যিই একদিন আসল হায়েনা আসবে যখন তখন আর হায়েনা প্রতিরোধে মানুষক পাশে পাবেন না। ঠিক যেমন জামায়াত শিবির বিএনপি নিয়ে ১৬ বছরের মিথ‍্যাচারের পর ২০২৪ এ এসে মানুষ সম্মিলিত ভাবে তাদের দমনপীড়নের ন‍্যারেটিভ ভেঙে স্লোগান তুলেছে “তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার”। আপনি হাসিনার মত পালাতে চান নাকি জবাবদিহিতার রাজনীতির প্রবর্তন চান? কোথাও না কোথাও আপনাকে শিখতে হবে কিভাবে জাতীয় ঐক‍্য করা যায়, দেশর স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামীলীগ আর ফিরবে না, ২০/২৫ বছরে, যদি আপনারা আমরা মিলে হাসিনার উল্টো রাজনীতিটা করতে পারি। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়, ঘৃনার চাষাবাদ চায় না, একটু নিরাপত্তা আর স্থিথ্শীলতা চায়, সন্তানকে ভাল স্কুলে পাঠাতে চায়, বেকার ছেলেটির চাকরী চায়, গৃহযুদ্ধাবস্তা চায় না।

সেটা না করে যদি হাসিনার রাজনীতিটাই আমরা করি, তাহলে বরং তার ফিরে আসা সহজ। কাউকে কল্পিত শত্রু বানিয়ে কল্পিত হায়েনা বানিয়ে উত্তেজনা তৈরী করা যাবে, স্বৈরতন্ত্রের পথে হাটা যাবে, আরেকটি পাল্টা ফ‍্যাসিবাদ তৈরী করা যাবে, মানুষকে যুদ্ধান্মদনায় রাখা যাবে, কিন্তু দরিদ্র আরো দরিদ্র হবে, হাজারো মায়ের বুখ খালি হবে, ঠিক একই হাসিনার দেখানো রাস্তায়। হাসিনা সেটাই চায়। আপনার অপকর্ম আর নির্যাতনের মাত্রা যেন হাসিনার অপরাধকে ছাড়িয়ে যায়! যেন তার পাপ হালকা হয়ে যায়। তাইলে না তার ফিরে আসা সহজ হবে!

আবারো বলি, হাসিনা, জয়ের আওয়ামীলীগ বাংলাদেশের সবচে জনধিকৃত রাজনৈতিক কাল্ট। ওরা আর ফিরতে পারবে না। ফিরলে ফিরবে ২০/২৫ বছর পর তাও রহিম করিমের নেতৃত্বে। ততদিনে রাজনাতিতে আওয়ামী গ্রহনযোগ‍্যতা শেষ। ওরা হবে ৪২ নমেবর দল।
বাংলাদের নিন্ম ও মধ‍্যবিত্ত জনসমাজ, ৫ কোটি ছাত্রসমাজের চোখের বিষ আওয়ামীলীগ। সে কারনে, যাদের হাতে সরাসরি রক্তের দাগ, তাদের কে চিন্হিত করে শাস্তির ব‍্যাবস্থা করুন ( ৫ থেকে ৫০০ জন সর্বচ্চ) বাদবাকী সবাই কে আপন করে নিন। আমাদের শত্রু হাসিনা ও শেখ পরিবার ও তাদের ঘনিষ্টরা। পুরো আওয়ামী সমর্থকরা নয়, সহানুভূতিশীলরা নয়।বিশাল জনগোষ্টীকে আপনি শত্রু বানিয়ে ফেললে আপনাকে হাসিনার চেয়েও কঠিন স্বৈরশাসক হতে হবে, দ্বিগুনেরও বেশি গনহত‍্যায় নামতে হবে। হাসিনার রাজনীতি নয়, বিকল্প রাজনীতির পথ খুজুন।

এর পরও যদি আপনি সন্তষ্ট না হন আমার কথায়, কিছুই করার নেই। আমি বিশ্বাস করি, বলপ্রয়োগ বা কল্পিত শত্রুতার ঘৃনার চাষাবাদে মুক্তি নেই। মুক্তি উদারতায়, আত্মবিশ্বাসে, জনকল‍্যানে, সবাইকে নিয়ে মুক্তির স্বপ্ন দেখাতে। ঘৃনা আর বলপ্রয়োগেকখনও টেকসই জয় আসে না। স্বৈরতন্ত্র ও ফ‍্যাসিাদ ফিরে আসে হাতবদল হয়ে!

 

প্রবাসী সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

 

সর্বশেষ নিউজ