গাজীপুর মহানগরের সারাবো এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ৬ষ্ঠ দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। পাশাপাশি ডরিন ও আইরিশ কারখানা শ্রমিকরাও সড়কে অবস্থান নিয়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে ওই সড়ক। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। পরিবহনগুলো চলছে বিকল্প রাস্তায়।
অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গত ১ সপ্তাহ ধরে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। সোমবার সকাল হতে রাত ১১টা পর্যন্ত সড়কটি অবরোধ করে রেখেছিলেন। ৮ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আবারও মঙ্গলবার সকালে তারা সড়কে অবস্থান নিয়েছেন।
শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের পরিমাণ হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। প্রতিমাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন তারা বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু করে। বেক্সিমকো কারখানার এই সমস্যার কারণে গতকাল সংঘর্ষ হয় আরেও কয়েকটি কারখানা ও এলাকাবাসীর মধ্যে। উত্তেজিত হয়ে অ্যামাজন নামক একটি গেঞ্জি তৈরির কারখানায় আগুন দেয় শ্রমিকরা। ওই ঘটনার পর থেকে আশপাশের বেশ কিছু কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা প্রতি মাসেরই আন্দোলন করে বেতন আদায় করছে। চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন ভাতা পরিশোধ করা হলেও চলতি মাসের ১৬ তারিখ হয়ে গেলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকরা বেতন পায়নি। যার কারণে বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
ডরিন কারখানার শ্রমিক আহমদ সাত্তার বলেন, আমাদের বেতন বকেয়া নেই। তবে আমাদের কারখানা বন্ধ রাখায় সড়ক অবরোধ করে রেখেছি। এছাড়াও বেক্সিমকোর পাশাপাশি আইরিন কারখানার শ্রমিকরাও সড়কে এসেছে।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মতোই তারা আজও সড়ক অবরোধ করেছেন। তারা গতকাল সারাদিন অবরোধ করে রেখে স্বেচ্ছায় রাতে সড়ক ছেড়ে দেন। তারা বেতন না পেলে সড়ক থেকে যাবে না। কারখানা কর্তৃপক্ষও বেতন দেবে এমন কোনো আশ্বাস এখন পর্যন্ত দেননি। তবে পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন।