১০ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার

বের হয়ে আসছে আদানির বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তির অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img
spot_img

বের হয়ে আসছে ভারতের আদানির বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে পদে পদে অনিয়ম। এরই মধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা সব বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর মধ্যে আদানির বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে পাওয়া গেছে নানা অনিয়ম। ভারতীয় ওই কোম্পানির বিদ্যুৎ চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরের যে রুট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, তা কোনো শুল্ক স্টেশনই নয় বলে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এ ছাড়া, করমুক্ত আমদানি নীতি, কয়লার বাড়তি দর, বিলম্বে বিল পরিশোধে অতিরিক্ত সুদ আরোপের জটিলতাসহ নানান অনিয়ম বের হয়ে আসছে।

আদানির চুক্তিতে উল্লেখ আছে, আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর মওকুফের আদেশ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদনে দায়বদ্ধ থাকবে পিডিবি। পরে কোনো শুল্ক-করের প্রসঙ্গ এলে তা পরিশোধের দায়ও নিতে হবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি)। এ ছাড়া বিল পরিশোধে বিলম্বের জন্য বছরে ১৫ শতাংশ চড়া সুদ ধরা আছে আদানির চুক্তিতে, যা পায়রায় নেই। এসব জটিলতার মধ্যেই বিদ্যুতের ২২ শতাংশ বাড়তি দাম নতুন করে চাইছে আদানি। পাশাপাশি আছে বকেয়া বিল পরিশোধের চাপও।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, পিডিবির পক্ষ থেকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টি যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা হয়নি। চুক্তির প্রতিটি ধারা-উপধারা প্রকাশ করতে হবে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের ঝাড়খণ্ড পাওয়ার প্ল্যান্টের সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য ১৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। সম্পূর্ণ আমদানি করা কয়লায় পরিচালিত এই পাওয়ার প্ল্যান্টটিকে ২০১৯ সালের মার্চে ভারত সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে কর ছাড় দেয়। যদিও বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তির সময় কর ছাড়ের বিষয়টি গোপন করে আদানি গ্রুপ। এ ছাড়া পায়রা, রামপাল ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করা কয়লার দাম টনপ্রতি ৭৫ ও ৮০ ডলার হলেও আদানি, টনপ্রতি নিয়েছে ৯৬ ডলার দরে। পরে পিডিবি দর নিয়ে আপত্তি জানালে দাম কমাতে রাজিও হয় তারা।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এনটিপিসি থেকে আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক-কর অব্যাহতির আদেশ জারি করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে আদানি গ্রুপ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সংস্থাটি।

সর্বশেষ নিউজ