(উৎসর্গ: বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)
স্বপ্ন শুরুর পূর্বেই ভেঙে যায় ঘুম!
স্বর্গীয় ওম থেকে কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফ্যালে দূরে
স্বশরীরী কালো ছায়া, প্রেতাত্মা ভয়ঙ্কর,
এক, দুই, তিন অসংখ্য, অগণিতো,
কৃতঘ্ন বুট আর বারুদের পৈচাশিক প্রলয় নৃত্য!
ফজরের আজানের আগে
পিতার পবিত্র জায়নামাজ উড়ে যায় অষ্টম আসমানে!
শুরু হয় দুঃস্বপ্নের দীর্ঘ কালোরাত, বিভীষিকাময়!
নিকষ অন্ধকার, থরো থরো…
দুই হাতের তালুর মধ্যে প্রকম্পিত পৃথিবী, অচেনা!
আতঙ্কিত আতিপাতি খুঁজি পিতার লোমশ বুক,
মুহূর্তে ভিজে উঠি থৈথৈ শৈশব সবুজ শস্যখেত
জুড়ে ভেসে ওঠে থকথকে তাজা রক্তলাল মানচিত্র!
ভিজতে ভিজতে ভেসে যাই হলুদ পালক, দূর নীলিমায়!
হকচকিত গিলে ফেলি আর্তচিৎকার! চুপ! একদম চুপ!
আচমকা জলতেষ্টা! জিহ্বা কণ্ঠনালী শুকিয়ে আড়ষ্ট!
আৎকা আটক হয়ে যায় অবাক জবান!
বাকরুদ্ধ অবরুদ্ধ, অযুত নিযুত বছর!
তবু আলগা হয় না প্রাণপণ
নিবিড় আঁকড়ে থাকা মৃত্তিকা শেকড়!
শূন্যতায় হাত বাড়ালেই ভেসে ওঠে মায়ামুখ
ভাসমান মেঘ ছুঁয়ে যায় নিরালে, কুয়াশামগ্ন
শীতল হাওয়া ফেলে যায় শুভ্র পালক, অন্য মনে
কবেকার! আরো ঘন নিবিড় সবুজ সরে গেলে দূরে
হিম হতে হতে বুড়ো হয়ে যায় বরফ পাহাড়!
সব রোদ্দুর জানে না, সূর্যাস্তের পরও
শুয়ে থাকে কিছু ছায়া, পথের পাশে!
প্রখর উত্তাপেও গলে না অনেক বোকা অভিমান!
ঘন নীল জোৎস্নায় বেসুরো মেলাই ধরাগলা,
আগুন বুকে ঝিঁঝিঁ পোকা মিলেমিশে উড়ে উড়ে থাকা!
পাখিরা ঘুমায় তখনও! গাছেরা ঘুমায়, মাছেরাও!
শুধু মা ছাড়া, পিতা পরিবার প্রিয়জন ছাড়া
কতক নক্ষত্র থাকে জেগে
জলে ভাসা পোড়া ছাঁই শুনসান শূন্য শ্মশান হৃদয়ে নিয়ে!
চোখ বুজলে নিমিষে পার হই সপ্তম আকাশ
ঘুচে যায় নীল আর কালোর বিভেদ!
অবর্ণনীয় আলোর বিচ্ছুরণ কেবলই
কেঁদে বেড়ায় আরশ আঙিনায়! আরশ কাঁপে না একবিন্দু!
অধরা ঐ নিঃসীম শুন্যতা জুড়ে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জুড়ে,
প্রাণপ্রিয় লাল সবুজের মানচিত্র জুড়ে
কেবল তোমার মুখ ভাসে,
তোমারই মুখ ভাসে, প্রিয়তমো পিতা,
তবু তোমাকে দেখি না একটিবার কোথাও আর…
দেখি না কোথাও একটিবার…