গাজীপুরে প্রতিদিনের কোলাহল, কলকারখানার শব্দ এবং কর্মব্যস্ত মানুষের চলাচল কমে গেছে। ঈদের ছুটি কাটাতে কর্মব্যস্ত বেশিরভাগ মানুষ চলে গেছেন গ্রামে। গাজীপুরের ব্যস্ততম এলাকাগুলো অনেকটা নীরব হয়ে গেছে। এলাকার দোকানপাট ও রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল কমে গেছে।
গাজীপুরে বসবাসকারী লাখ লাখ পোশাকশ্রমিক গত দুদিনে গাজীপুর ছেড়ে গেছে। গাজীপুরের পাড়া-মহল্লার রাস্তাঘাট অনেকটাই এখন ফাঁকা। যারা এখনো রয়ে গেছেন তারা কালের মধ্যেই গাজীপুর ছাড়বেন।
গতকাল সোমবার দুপুরের পর গাজীপুরের দুই মহাসড়কে যানজট থাকলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে তা কমতে থাকে। বিকালের দিকে দুই মহাসড়কের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
সোমবার রাতে যানজটের ধকল সয়ে বেশির ভাগ যাত্রী নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারলেও সকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রাতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত যানবাহন না পেয়ে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও বাসের ছাদে করে যাচ্ছেন। এই সুযোগে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গাড়ি ভাড়া ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণেরও বেশি দাবি করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
দুপুরে চন্দ্রা ত্রিমোড় থেকে নবীনগর রোডে দীর্ঘ যানবাহনের সারি দেখা গেছে। কালিয়াকৈর মুখী এবং চন্দ্রা ফ্লাইওভারেও যানবাহনে চলছে থেমে থেমে। অপরদিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা ও ভোগরা বাইপাসে যানবাহনের চাপ রয়েছে। মহাসড়কের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য দিনরাত কাজ করছেন। তবে চালকদের বিশৃঙ্খল অবস্থার কারণে দায়িত্ব পালনে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘গত রাতে বেশ যানজট থাকলেও রাত দুটার পর থেকে আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। তবে সকাল থেকে আবার যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এখন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
যাত্রী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার শিল্পকারখানা ছুটি ঘোষণা হলে দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে ব্যাপকভাবে ঘরমুখী মানুষের ঢল নামে। অতিরিক্ত মানুষ আর যানবাহনের চাপে বিকাল থেকেই শুরু হয় যানজট। ইফতারের পর সেই যানজট আর মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে। এরপর থেমে থেমে যানবাহন চললেও মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত একই অবস্থা দেখা যায় মহাসড়ক দুটিতে। তবে আজ সকাল ৯টার পর থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলেও কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ও আশপাশ এবং গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগাড়সহ আশপাশের এলাকায় থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। এসব এলাকায় আজও শত শত ঘরমুখী মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশের ওসি শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চন্দ্রাকে কেন্দ্র করে সারারাত যানবাহনের ধীরগতি থাকলেও সকালে কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এখনও আশপাশে যানবাহনের সারি থাকলেও থেমে থেমে যানবাহন চলছে। বিকালের মধ্যে চাপ অনেকটা কমে যাবে।’
বাসন থানার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের ছুটিতে পোশাক শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে গেলেও এলাকায় নিরাপত্তা দিতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। রাতের বেলা টহল জোরদার করা হবে।
(এইদিনএইসময় /জাকারিয়া শুভ)