বিসিএসের প্রশ্নফাঁসে আলোচিত আবেদ আলী ও তার অঢেল সম্পদ। একজন গাড়ি চালক একাই তো প্রশ্ন ফাঁস করতে পারেনি, তাহলে কোন কর্মকর্তারা যুগ যুগ ধরে আবেদ আলীকে পৃষ্ঠপোষকতা দিলেন, তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, তাদের নাম কেন আসছে না আলোচনায়, আবেদ আলীর এত সম্পদ থাকলে প্রশ্নফাঁসে জড়িত তার বড়কর্তােদের সম্পদের পরিমান কত হবে? সেগুলো কোথায়? এমন নানা প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এ ঘটনা ঘিরে।
গ্রেফতারকৃত দুই উপ-পরিচালক আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকাশ করেছেন। কারা কারা জড়িত পিএসসির এবং পিএসসির বাইরে তাদের সবার নামই বলেছেন। এই প্রশ্নপত্রে কারা চাকরি পেয়েছেন তাদের অনেকের নামই তারা জানেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগই চাকরিতে রয়েছেন। এর মধ্যে আবু জাফরই প্রশ্ন ফাঁসের অন্যতম নাটের গুরু। তদন্তে বেরিয়ে আসছে তারা শতশত কোটি টাকার এই বাণিজ্য দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। এ যেন সিনেমার ঘটনাকে হার মানিয়েছে। এতে বিব্রত তদন্ত কর্মকর্তারা। যারা পিএসসিতে শীর্ষ পর্যায়ে দায়িত্বে রয়েছে এবং অতীতেও দায়িত্ব পালন করেছেন এরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার মতো জঘন্য ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। শীর্ষ কর্মকর্তারা দায়িত্বে থাকার পরেও কীভাবে দুই যুগ ধরে পিএসসি থেকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটল তার হিসাব মেলাতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই বলছেন তারা হয় জড়িত না হয় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে অভিযুক্ত করা উচিত। এমন কোনো পরীক্ষা নাই যে এই চক্র প্রশ্ন ফাঁস করে নাই।
তদন্তে বেরিয়ে আসছে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলিয়ে অর্ধশতাধিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে এরা। কয়েক জন স্বীকারও করেছেন।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁস করেছে তাদের নামের তালিকা করতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। অনেকেই তাদেরকে ‘আবেদ আলী ক্যাডার’ হিসাবে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছে। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও দাবি জানায়।
গত সোমবার রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আবেদ আলী ও তার ছেলে সিয়ামসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। বিসিএসের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদের ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন সিআইডির কাছে।
গাড়ি চালক আবেদ আলী শত কোটি টাকা বানিয়েছেন প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। এদের নেটওয়ার্ক সারা দেশে সক্রিয়। আবেদ আলী যদি কোটি কোটি টাকার মালিক হন তাহলে যেসব কর্মকর্তা প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত তারা কি পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছে তা অকল্পনীয়। কোনো কোনো কর্মকর্তার হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকার তথ্য স্বীকারও করেছেন তারা।