চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৩১ মে) রাত ১২টা ২০ মিনিটে তিনি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
সফরকালে তিনি জাপানের টোকিওতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, অধ্যাপক ইউনূস প্রায় ২০টি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে ছিল জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। সেখানে দুই দেশ চলতি বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (EPA) স্বাক্ষরের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
বৈঠকে জাপান বাংলাদেশের বাজেট ও রেলপথ খাতে ১.৬৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়। একই দিনে স্বাক্ষরিত হয় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক:
অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা উন্নয়নে ৪১৮ মিলিয়ন ডলারের ডেভেলপমেন্ট পলিসি ঋণ,
জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়েল গেজ রেলপথ প্রকল্পে ৬৪১ মিলিয়ন ডলারের ঋণ,
মানবসম্পদ উন্নয়নে ৪.২ মিলিয়ন ডলারের অনুদান।
‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’-এ প্রধান উপদেষ্টা দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এতে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে সফরে। টোকিওতে এক সেমিনারে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়, যার লক্ষ্য জাপানে বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী নিয়োগ। জাপানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
এছাড়া, অধ্যাপক ইউনূস ‘৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়া’-তে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নেন এবং মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশকে আসিয়ানে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সমর্থনের আহ্বান জানান।
সফরের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সোকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদানের জন্য সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফর বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্ক আরও গভীর করবে, পাশাপাশি অর্থনীতি ও মানবসম্পদ রপ্তানির নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।

