সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ি গ্রামে ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। পুকুরে সাঁতার কাটতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে আলিফ (১২) নামের এক কিশোর। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আলিফ চৌবাড়ি গ্রামের কলেজপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। সেদিন দুপুরে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে গ্রামের একটি পুকুরে সাঁতার কাটতে নামে সে। হঠাৎ গভীর পানিতে ডুবে যায়। বন্ধুদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রায় আধাঘণ্টা পর তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মাত্র ১২ বছরের আলিফের মৃত্যুতে পুরো পরিবারে নেমে এসেছে শোকের মাতম। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা-বাবা ও স্বজনরা। সহপাঠী ও প্রতিবেশীরাও স্তব্ধ হয়ে গেছেন এ অকাল মৃত্যুতে।
স্থানীয়রা জানান, পড়াশোনায় মেধাবী ও ভদ্র স্বভাবের ছেলে ছিল আলিফ। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গেও ছিল প্রাণবন্ত। তার চলে যাওয়া পুরো গ্রামকে শোকের সাগরে ভাসিয়েছে।
চৌবাড়ি গ্রামের মতো গ্রামীণ জনপদে শিশুদের খেলার অন্যতম স্থান পুকুর। গরমের দিনে সাঁতার কাটা বা পানিতে নামা শিশুদের কাছে আনন্দের হলেও, সাঁতার জানা না থাকলে তা হয়ে ওঠে ভয়াবহ ঝুঁকির কারণ।
প্রতিবছর এভাবেই দেশের নানা স্থানে ডুবে প্রাণ হারায় শত শত শিশু-কিশোর। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে সচেতনতার অভাব, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা এবং সাঁতার শেখার সুযোগ সীমিত থাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই।
স্থানীয়রা মনে করেন, গ্রামে শিশুদের নিরাপদ বিনোদনের জায়গা না থাকায় তারা ঝুঁকি নিয়ে পুকুরে নামে। অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজ পর্যায়ে শিশুদের সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুমৃত্যু কমাতে সাঁতার শেখানোকে জাতীয়ভাবে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
আলিফের মৃত্যু তাই শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো সমাজের জন্যই সতর্কবার্তা। এখনই যদি শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে এ ধরনের ট্র্যাজেডি বারবার ঘটতেই থাকবে।