গেল বছর জুন মাসে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে রুনা লায়লা নামে এক হাজতিকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। তাৎক্ষনিক কয়েকজনকে বদলি করে ঘটনা সামাল দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। এরপর শুরু হয় লোকদেখানো তদন্ত, যা এক বছর ধরে ঝুলে আছে। অবশেষে আজ বুধবার (৫জুন) সাক্ষ্য নিতে ঢাকায় কারা অধিদপ্তরে ডাকা হয় অভিযুক্তদের। তবে বিচার কী হলো, কবে এই তদন্ত শেষ হবে তা এখনো জানতে পারেননি অভিযোগকারী বা ভুক্তভোগীর পরিবার।
অবশ্য নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা নারী রুনা লায়লার ভাইকেও ডাকা হয়েছিল সাক্ষ্য দিতে। তবে তিনি সাক্ষ্য শেষে হতাশ হয়ে ফিরেছেন বলে এইদিন এইসময়কে তার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন।
সেসময় নির্যাতিত রুনা লায়লা যাদের নাম বলেছেন গণমাধ্যমের কাছে, তাদের কাউকেই শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। এমনকি প্রধান অভিযুক্ত জেলার ফারহানাকে আইওয়াশ হিসেবে শুধু বদলি করা হয়।
কারাগারের ভেতরে কারা কর্মকর্তাসহ তাদের অধীনদের নির্যাতনে এখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন অসহায় দিনতিপাত করা রুনার ভাই আব্দুল করিম কারা অধিদপ্তর থেকে সাক্ষ্য দিয়ে ফিরে বুধবার সন্ধ্যায় এইদিন এইসময়কে বলেন, আমার বোন আগে একটা কর্ম করে খেত, এখন সে মানসিক ভারসাম্যহীন নিযার্তনে তার মস্তিস্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা, চিকিৎসা খরচ বা কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। একবছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে আমার বোন। আর তদন্তের নাম করে আমাদের কারা অধিদপ্তরে ডাকা হয়েছে মৌখিকভাবে, আমাদের কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। আমরা আজ (বুধবার) সাক্ষ্য দিয়ে এলাম।’
এদিকে এ ঘটনায় সেসময় বদলি করা হয়েছিল বেশ কয়েকজন কারারক্ষী নারীকে। কিন্তু তবে সেময়েই রুণা লায়লা বলেছিল, তাদের কাউকেই তিনি চিনেন না । এর মধ্য দিয়ে রুনা লায়লা কি এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, বদলি হওয়ারা নির্যাতনে জড়িত নন। আর যারা জড়িত তাদের বাঁচাতেই অন্যদের বদলি করেছিল তৎকালীন কারাপ্রশাসন- উঠেছে এ প্রশ্নও।
সেদিন যা ঘটেছিল
সাধারণ একটি চুরির মামলায় আসামী হয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন রুনা লায়লা। কারাগারের তিন স্তরের তল্লাশি শেষে তাকে কারাগারের ভেতরে ঢোকানো হয়। এরপর তার কাছে কিছু টাকা দেখা গেলে শুরু হয় নির্মম নির্যাতন। কে্ইস টেবিলের কাছে একটি গাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে চলে পেটানো। যার ফলে রুনা লায়লা এখন মানসিক ভারসাম্যহীন।